১০:৩৮ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ০৭ ডিসেম্বর ২০২৫
জানুন তাহাজ্জুদ নামাজের নিয়ম, নিয়ত, সময়, ফজিলত ও দোয়া কুরআন-হাদীসের আলোকে।

তাহাজ্জুদ নামাজের নিয়ম, নিয়ত, ফজিলত, সময় দোয়া ও ১০টি প্রশ্নোত্তর

Mufty Sheikh Imran
  • আপডেট সময়ঃ ০২:৪৪:৩২ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৫ অক্টোবর ২০২৫
  • / ৪৯ বার পড়া হয়েছে।

তাহাজ্জুদ নামাজের নিয়ম, নিয়ত, ফজিলত, সময় দোয়া ও ১০টি প্রশ্নোত্তর

📖 তাহাজ্জুদ নামাজ কী?

তাহাজ্জুদ নামাজ হলো এক বিশেষ নফল নামাজ, যা ইশার নামাজের পর কিছু সময় ঘুমিয়ে আবার জেগে উঠে আদায় করা হয়। এটি আল্লাহর নিকটবর্তী হওয়ার অন্যতম শ্রেষ্ঠ ইবাদত। নবী করিম ﷺ সর্বদা তাহাজ্জুদ আদায় করতেন এবং তাঁর উম্মতকেও উৎসাহিত করেছেন।

আল্লাহ তাআলা বলেন:
“আর রাতের কিছু অংশে আপনি তাহাজ্জুদ নামাজ আদায় করুন; এটি আপনার জন্য নফল ইবাদত। আশা করা যায়, আপনার প্রতিপালক আপনাকে প্রশংসিত মর্যাদায় প্রতিষ্ঠিত করবেন।”
সূরা আল-ইসরা, আয়াত ৭৯


🕋 তাহাজ্জুদ নামাজের সময়

তাহাজ্জুদ নামাজের সময় শুরু হয় ইশার নামাজের পর থেকে ফজরের আগ পর্যন্ত।
তবে সবচেয়ে উত্তম সময় হলো রাতের শেষ তৃতীয়াংশ, অর্থাৎ রাতের শেষ ভাগে, যখন অধিকাংশ মানুষ ঘুমে থাকে।

📌 উদাহরণ:
যদি ইশার নামাজ হয় রাত ৯টায় এবং ফজর ৫টায়, তাহলে শেষ তৃতীয়াংশ শুরু হবে আনুমানিক রাত ৩টার পর থেকে ফজর পর্যন্ত।


🧎‍♂️ তাহাজ্জুদ নামাজের রাকআত সংখ্যা

  • সর্বনিম্ন: ২ রাকআত

  • সর্বাধিক: ৮ থেকে ১২ রাকআত

হাদীস:
“রাসূলুল্লাহ ﷺ রাতের নামাজ ১১ রাকআত আদায় করতেন, যার মধ্যে বিতর নামাজও অন্তর্ভুক্ত ছিল।”
সহিহ বুখারি, হাদীস ১১৪৭


🧿 তাহাজ্জুদ নামাজের নিয়ত (Niyyat in Arabic, Transliteration & Bengali Meaning)

আরবি নিয়ত:

نَوَيْتُ أَنْ أُصَلِّيَ لِلّٰهِ تَعَالَى رَكْعَتَيْنِ صَلَاةَ التَّهَجُّدِ سُنَّةً لِلّٰهِ تَعَالَى

বাংলা উচ্চারণ:

“নাওয়াইতু আন উসাল্লিয়া লিল্লাহি তা‘আলা রাক‘আতাইন সালাতাত তাহাজ্জুদি সুন্নাতান লিল্লাহি তা‘আলা।”

বাংলা অর্থ:

“আমি আল্লাহ তা‘আলার সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে দুই রাকআত তাহাজ্জুদের নামাজ আদায় করার নিয়ত করলাম।”


🕋 তাহাজ্জুদ নামাজের পদ্ধতি

  1. প্রথমে ঘুম থেকে উঠুন এবং ওযু করুন।

  2. কিবলামুখী হয়ে দাঁড়ান এবং নিয়ত করুন।

  3. প্রতি রাকআতে সূরা ফাতিহার পর যেকোনো সূরা পড়ুন।

  4. ২ রাকআত করে সালাম ফিরান।

  5. শেষে দোয়া ও ইস্তেগফার করুন।

👉 নবী করিম ﷺ তাহাজ্জুদের পর বিতর নামাজ আদায় করতেন, তাই চাইলে তাহাজ্জুদের পর বিতরও পড়তে পারেন।


🤲 তাহাজ্জুদ নামাজের বিশেষ দোয়া

اللهم اغفر لي، وارحمني، واهدني، وعافني، وارزقني
বাংলা অর্থ:
“হে আল্লাহ! আমাকে ক্ষমা করুন, দয়া করুন, হিদায়াত দিন, সুস্থতা দিন এবং রিজিক দিন।”

আরও একটি দোয়া:

اللَّهُمَّ إِنِّي أَعُوذُ بِكَ مِنَ الْهَمِّ وَالْحَزَنِ
বাংলা অর্থ:
“হে আল্লাহ! আমি আপনার কাছে আশ্রয় চাই দুশ্চিন্তা ও দুঃখ থেকে।”


🌌 তাহাজ্জুদ নামাজের ফজিলত

তাহাজ্জুদ নামাজের ফজিলত সম্পর্কে কুরআন ও হাদীসে অসংখ্য বর্ণনা রয়েছে।

১️⃣ আল্লাহর নিকট প্রিয় ইবাদত:
নবী করিম ﷺ বলেছেন —
“সর্বোত্তম নামাজ হলো রাতের নামাজ, যা ফজরের পূর্বে আদায় করা হয়।”
সহিহ মুসলিম

২️⃣ দোয়া কবুলের শ্রেষ্ঠ সময়:
“রাতের শেষ তৃতীয়াংশে আল্লাহ তাআলা বলেন— কে আমার কাছে দোয়া করবে, আমি তার দোয়া কবুল করব?”
সহিহ মুসলিম, হাদীস ৭৫৮

৩️⃣ গুনাহ মাফ ও রিযিক বৃদ্ধি:
তাহাজ্জুদ নামাজ মানুষকে গুনাহ থেকে মুক্ত করে, মন প্রশান্ত রাখে এবং জীবনে বরকত আনে।

৪️⃣ জান্নাতে উচ্চ মর্যাদা:
“যারা রাতে জেগে নামাজ পড়ে, তাদের জন্য জান্নাতে বিশেষ মর্যাদা রয়েছে।”
সূরা আস-সাজদা, আয়াত ১৬-১৭


💫 তাহাজ্জুদ নামাজের উপকারিতা

  1. মানসিক শান্তি ও প্রশান্তি বৃদ্ধি করে

  2. হতাশা ও দুশ্চিন্তা দূর করে

  3. আল্লাহর প্রতি আস্থা ও ভালোবাসা বাড়ায়

  4. আত্মিক শক্তি বৃদ্ধি করে

  5. রিযিক ও জীবনে বরকত আসে


🌙 তাহাজ্জুদ নামাজে কোন সূরা পড়া উত্তম?

  • সূরা আল-ইখলাস (১১২)

  • সূরা আল-মুজ্জাম্মিল (৭৩)

  • সূরা আল-মুলক (৬৭)

  • সূরা আল-ইনসান (৭৬)

এসব সূরায় আল্লাহর মহিমা, ধৈর্য ও তাকওয়ার বার্তা রয়েছে, যা রাতের ইবাদতের সঙ্গে মানানসই।


📚 

তাহাজ্জুদ নামাজ হলো মুমিনের আত্মার খাদ্য।
রাত্রির নীরবতায়, যখন সবাই ঘুমিয়ে থাকে, তখন আল্লাহর সামনে দাঁড়িয়ে নিজের দুঃখ, কষ্ট ও আশা ব্যক্ত করা— এটাই তাহাজ্জুদের আসল অর্থ।
প্রতিদিন অন্তত দুই রাকআত তাহাজ্জুদ নামাজ পড়ে জীবনে প্রশান্তি ও বরকত আনুন ইনশা’আল্লাহ। 🌙

10 FAQ-

১. তাহাজ্জুদ নামাজ কখন পড়া হয়?
তাহাজ্জুদ নামাজ রাতের শেষ ভাগে, অর্থাৎ ফজরের আগে সময়ে আদায় করা উত্তম। তবে ইশার নামাজের পর ঘুমিয়ে উঠে যে কোনো সময়ে পড়া যায়।


২. তাহাজ্জুদ নামাজ কয় রাকআত?
তাহাজ্জুদ নামাজ কমপক্ষে ২ রাকআত এবং সর্বাধিক ৮ বা ১২ রাকআত পর্যন্ত পড়া যায়। রাসূলুল্লাহ ﷺ সাধারণত ৮ রাকআত তাহাজ্জুদ আদায় করতেন।


৩. তাহাজ্জুদ নামাজের নিয়ত কীভাবে করতে হয়?
বাংলায় নিয়ত:
“আমি আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে দুই রাকআত তাহাজ্জুদ নামাজ আদায় করছি।”
আরবিতে:
نَوَيْتُ أَنْ أُصَلِّيَ لِلّٰهِ تَعَالٰى رَكْعَتَيْنِ صَلَاةَ التَّهَجُّدِ


৪. তাহাজ্জুদ নামাজ পড়ার আগে ঘুমানো কি বাধ্যতামূলক?
হ্যাঁ, তাহাজ্জুদ নামাজের মূল অর্থই হলো “রাতে ঘুম থেকে উঠে নামাজ পড়া।” তবে কেউ ঘুমাতে না পারলেও ইশার পর থেকে ফজর পর্যন্ত এ নামাজ আদায় করা যায়।


৫. তাহাজ্জুদ নামাজে কি কোনো নির্দিষ্ট সূরা পড়তে হয়?
না, নির্দিষ্ট কোনো সূরা পড়ার বাধ্যবাধকতা নেই। তবে দীর্ঘ কিয়াম এবং কুরআন তিলাওয়াত করাই উত্তম।


৬. তাহাজ্জুদ নামাজের ফজিলত কী?
আল্লাহ তায়ালা বলেন:

“রাতের কিছু অংশে তাহাজ্জুদ নামাজ আদায় করো; এটা তোমার জন্য নফল ইবাদত।”
(সূরা আল-ইসরা: ৭৯)
এই নামাজ আল্লাহর নিকট প্রিয়তম এবং দোয়া কবুলের অন্যতম শ্রেষ্ঠ সময়।


৭. তাহাজ্জুদ নামাজে দোয়া কিভাবে করতে হয়?
তাহাজ্জুদের সেজদায়, সালামের পর বা নামাজ শেষে হাত তুলে আল্লাহর কাছে আন্তরিকভাবে দোয়া করতে হয়। নিজের পাপ ক্ষমা, রিজিক, রহমত ও হেদায়াত প্রার্থনা করা উত্তম।


৮. তাহাজ্জুদ নামাজ একা না জামাতে পড়া যায়?
তাহাজ্জুদ নামাজ সাধারণত একা পড়াই উত্তম। তবে মাঝে মাঝে জামাতে আদায় করাও বৈধ, যেমন রমজানে তারাবিহ নামাজ।


৯. তাহাজ্জুদ নামাজের পর কোন দোয়া বেশি পড়া উচিত?
রাসূলুল্লাহ ﷺ বলতেন:

اللَّهُمَّ اغْفِرْ لِي، وَارْحَمْنِي، وَاهْدِنِي، وَعَافِنِي، وَارْزُقْنِي
অর্থ: “হে আল্লাহ! আমাকে ক্ষমা কর, দয়া কর, হেদায়াত দাও, সুস্থতা দাও এবং রিজিক দাও।”


১০. তাহাজ্জুদ নামাজে দোয়া করলে কি আল্লাহ কবুল করেন?
হ্যাঁ, তাহাজ্জুদের সময় হলো “দোয়া কবুলের বিশেষ মুহূর্ত।”
রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন:

“রাতের শেষ তৃতীয়াংশে আল্লাহ তায়ালা নেমে আসেন এবং বলেন, কে আমার কাছে দোয়া করে, আমি তার দোয়া কবুল করব।”
(সহীহ বুখারী, হাদীস ১১৪৫)

গোপন পাপ থেকে বাঁচার উপায় : দলিল ও যুক্তি সহ ইসলামিক সমাধান

নিউজটি শেয়ার করুন

বিস্তারিত লিখুনঃ

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষণ করুন

জানুন তাহাজ্জুদ নামাজের নিয়ম, নিয়ত, সময়, ফজিলত ও দোয়া কুরআন-হাদীসের আলোকে।

তাহাজ্জুদ নামাজের নিয়ম, নিয়ত, ফজিলত, সময় দোয়া ও ১০টি প্রশ্নোত্তর

আপডেট সময়ঃ ০২:৪৪:৩২ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৫ অক্টোবর ২০২৫

📖 তাহাজ্জুদ নামাজ কী?

তাহাজ্জুদ নামাজ হলো এক বিশেষ নফল নামাজ, যা ইশার নামাজের পর কিছু সময় ঘুমিয়ে আবার জেগে উঠে আদায় করা হয়। এটি আল্লাহর নিকটবর্তী হওয়ার অন্যতম শ্রেষ্ঠ ইবাদত। নবী করিম ﷺ সর্বদা তাহাজ্জুদ আদায় করতেন এবং তাঁর উম্মতকেও উৎসাহিত করেছেন।

আল্লাহ তাআলা বলেন:
“আর রাতের কিছু অংশে আপনি তাহাজ্জুদ নামাজ আদায় করুন; এটি আপনার জন্য নফল ইবাদত। আশা করা যায়, আপনার প্রতিপালক আপনাকে প্রশংসিত মর্যাদায় প্রতিষ্ঠিত করবেন।”
সূরা আল-ইসরা, আয়াত ৭৯


🕋 তাহাজ্জুদ নামাজের সময়

তাহাজ্জুদ নামাজের সময় শুরু হয় ইশার নামাজের পর থেকে ফজরের আগ পর্যন্ত।
তবে সবচেয়ে উত্তম সময় হলো রাতের শেষ তৃতীয়াংশ, অর্থাৎ রাতের শেষ ভাগে, যখন অধিকাংশ মানুষ ঘুমে থাকে।

📌 উদাহরণ:
যদি ইশার নামাজ হয় রাত ৯টায় এবং ফজর ৫টায়, তাহলে শেষ তৃতীয়াংশ শুরু হবে আনুমানিক রাত ৩টার পর থেকে ফজর পর্যন্ত।


🧎‍♂️ তাহাজ্জুদ নামাজের রাকআত সংখ্যা

  • সর্বনিম্ন: ২ রাকআত

  • সর্বাধিক: ৮ থেকে ১২ রাকআত

হাদীস:
“রাসূলুল্লাহ ﷺ রাতের নামাজ ১১ রাকআত আদায় করতেন, যার মধ্যে বিতর নামাজও অন্তর্ভুক্ত ছিল।”
সহিহ বুখারি, হাদীস ১১৪৭


🧿 তাহাজ্জুদ নামাজের নিয়ত (Niyyat in Arabic, Transliteration & Bengali Meaning)

আরবি নিয়ত:

نَوَيْتُ أَنْ أُصَلِّيَ لِلّٰهِ تَعَالَى رَكْعَتَيْنِ صَلَاةَ التَّهَجُّدِ سُنَّةً لِلّٰهِ تَعَالَى

বাংলা উচ্চারণ:

“নাওয়াইতু আন উসাল্লিয়া লিল্লাহি তা‘আলা রাক‘আতাইন সালাতাত তাহাজ্জুদি সুন্নাতান লিল্লাহি তা‘আলা।”

বাংলা অর্থ:

“আমি আল্লাহ তা‘আলার সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে দুই রাকআত তাহাজ্জুদের নামাজ আদায় করার নিয়ত করলাম।”


🕋 তাহাজ্জুদ নামাজের পদ্ধতি

  1. প্রথমে ঘুম থেকে উঠুন এবং ওযু করুন।

  2. কিবলামুখী হয়ে দাঁড়ান এবং নিয়ত করুন।

  3. প্রতি রাকআতে সূরা ফাতিহার পর যেকোনো সূরা পড়ুন।

  4. ২ রাকআত করে সালাম ফিরান।

  5. শেষে দোয়া ও ইস্তেগফার করুন।

👉 নবী করিম ﷺ তাহাজ্জুদের পর বিতর নামাজ আদায় করতেন, তাই চাইলে তাহাজ্জুদের পর বিতরও পড়তে পারেন।


🤲 তাহাজ্জুদ নামাজের বিশেষ দোয়া

اللهم اغفر لي، وارحمني، واهدني، وعافني، وارزقني
বাংলা অর্থ:
“হে আল্লাহ! আমাকে ক্ষমা করুন, দয়া করুন, হিদায়াত দিন, সুস্থতা দিন এবং রিজিক দিন।”

আরও একটি দোয়া:

اللَّهُمَّ إِنِّي أَعُوذُ بِكَ مِنَ الْهَمِّ وَالْحَزَنِ
বাংলা অর্থ:
“হে আল্লাহ! আমি আপনার কাছে আশ্রয় চাই দুশ্চিন্তা ও দুঃখ থেকে।”


🌌 তাহাজ্জুদ নামাজের ফজিলত

তাহাজ্জুদ নামাজের ফজিলত সম্পর্কে কুরআন ও হাদীসে অসংখ্য বর্ণনা রয়েছে।

১️⃣ আল্লাহর নিকট প্রিয় ইবাদত:
নবী করিম ﷺ বলেছেন —
“সর্বোত্তম নামাজ হলো রাতের নামাজ, যা ফজরের পূর্বে আদায় করা হয়।”
সহিহ মুসলিম

২️⃣ দোয়া কবুলের শ্রেষ্ঠ সময়:
“রাতের শেষ তৃতীয়াংশে আল্লাহ তাআলা বলেন— কে আমার কাছে দোয়া করবে, আমি তার দোয়া কবুল করব?”
সহিহ মুসলিম, হাদীস ৭৫৮

৩️⃣ গুনাহ মাফ ও রিযিক বৃদ্ধি:
তাহাজ্জুদ নামাজ মানুষকে গুনাহ থেকে মুক্ত করে, মন প্রশান্ত রাখে এবং জীবনে বরকত আনে।

৪️⃣ জান্নাতে উচ্চ মর্যাদা:
“যারা রাতে জেগে নামাজ পড়ে, তাদের জন্য জান্নাতে বিশেষ মর্যাদা রয়েছে।”
সূরা আস-সাজদা, আয়াত ১৬-১৭


💫 তাহাজ্জুদ নামাজের উপকারিতা

  1. মানসিক শান্তি ও প্রশান্তি বৃদ্ধি করে

  2. হতাশা ও দুশ্চিন্তা দূর করে

  3. আল্লাহর প্রতি আস্থা ও ভালোবাসা বাড়ায়

  4. আত্মিক শক্তি বৃদ্ধি করে

  5. রিযিক ও জীবনে বরকত আসে


🌙 তাহাজ্জুদ নামাজে কোন সূরা পড়া উত্তম?

  • সূরা আল-ইখলাস (১১২)

  • সূরা আল-মুজ্জাম্মিল (৭৩)

  • সূরা আল-মুলক (৬৭)

  • সূরা আল-ইনসান (৭৬)

এসব সূরায় আল্লাহর মহিমা, ধৈর্য ও তাকওয়ার বার্তা রয়েছে, যা রাতের ইবাদতের সঙ্গে মানানসই।


📚 

তাহাজ্জুদ নামাজ হলো মুমিনের আত্মার খাদ্য।
রাত্রির নীরবতায়, যখন সবাই ঘুমিয়ে থাকে, তখন আল্লাহর সামনে দাঁড়িয়ে নিজের দুঃখ, কষ্ট ও আশা ব্যক্ত করা— এটাই তাহাজ্জুদের আসল অর্থ।
প্রতিদিন অন্তত দুই রাকআত তাহাজ্জুদ নামাজ পড়ে জীবনে প্রশান্তি ও বরকত আনুন ইনশা’আল্লাহ। 🌙

10 FAQ-

১. তাহাজ্জুদ নামাজ কখন পড়া হয়?
তাহাজ্জুদ নামাজ রাতের শেষ ভাগে, অর্থাৎ ফজরের আগে সময়ে আদায় করা উত্তম। তবে ইশার নামাজের পর ঘুমিয়ে উঠে যে কোনো সময়ে পড়া যায়।


২. তাহাজ্জুদ নামাজ কয় রাকআত?
তাহাজ্জুদ নামাজ কমপক্ষে ২ রাকআত এবং সর্বাধিক ৮ বা ১২ রাকআত পর্যন্ত পড়া যায়। রাসূলুল্লাহ ﷺ সাধারণত ৮ রাকআত তাহাজ্জুদ আদায় করতেন।


৩. তাহাজ্জুদ নামাজের নিয়ত কীভাবে করতে হয়?
বাংলায় নিয়ত:
“আমি আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে দুই রাকআত তাহাজ্জুদ নামাজ আদায় করছি।”
আরবিতে:
نَوَيْتُ أَنْ أُصَلِّيَ لِلّٰهِ تَعَالٰى رَكْعَتَيْنِ صَلَاةَ التَّهَجُّدِ


৪. তাহাজ্জুদ নামাজ পড়ার আগে ঘুমানো কি বাধ্যতামূলক?
হ্যাঁ, তাহাজ্জুদ নামাজের মূল অর্থই হলো “রাতে ঘুম থেকে উঠে নামাজ পড়া।” তবে কেউ ঘুমাতে না পারলেও ইশার পর থেকে ফজর পর্যন্ত এ নামাজ আদায় করা যায়।


৫. তাহাজ্জুদ নামাজে কি কোনো নির্দিষ্ট সূরা পড়তে হয়?
না, নির্দিষ্ট কোনো সূরা পড়ার বাধ্যবাধকতা নেই। তবে দীর্ঘ কিয়াম এবং কুরআন তিলাওয়াত করাই উত্তম।


৬. তাহাজ্জুদ নামাজের ফজিলত কী?
আল্লাহ তায়ালা বলেন:

“রাতের কিছু অংশে তাহাজ্জুদ নামাজ আদায় করো; এটা তোমার জন্য নফল ইবাদত।”
(সূরা আল-ইসরা: ৭৯)
এই নামাজ আল্লাহর নিকট প্রিয়তম এবং দোয়া কবুলের অন্যতম শ্রেষ্ঠ সময়।


৭. তাহাজ্জুদ নামাজে দোয়া কিভাবে করতে হয়?
তাহাজ্জুদের সেজদায়, সালামের পর বা নামাজ শেষে হাত তুলে আল্লাহর কাছে আন্তরিকভাবে দোয়া করতে হয়। নিজের পাপ ক্ষমা, রিজিক, রহমত ও হেদায়াত প্রার্থনা করা উত্তম।


৮. তাহাজ্জুদ নামাজ একা না জামাতে পড়া যায়?
তাহাজ্জুদ নামাজ সাধারণত একা পড়াই উত্তম। তবে মাঝে মাঝে জামাতে আদায় করাও বৈধ, যেমন রমজানে তারাবিহ নামাজ।


৯. তাহাজ্জুদ নামাজের পর কোন দোয়া বেশি পড়া উচিত?
রাসূলুল্লাহ ﷺ বলতেন:

اللَّهُمَّ اغْفِرْ لِي، وَارْحَمْنِي، وَاهْدِنِي، وَعَافِنِي، وَارْزُقْنِي
অর্থ: “হে আল্লাহ! আমাকে ক্ষমা কর, দয়া কর, হেদায়াত দাও, সুস্থতা দাও এবং রিজিক দাও।”


১০. তাহাজ্জুদ নামাজে দোয়া করলে কি আল্লাহ কবুল করেন?
হ্যাঁ, তাহাজ্জুদের সময় হলো “দোয়া কবুলের বিশেষ মুহূর্ত।”
রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন:

“রাতের শেষ তৃতীয়াংশে আল্লাহ তায়ালা নেমে আসেন এবং বলেন, কে আমার কাছে দোয়া করে, আমি তার দোয়া কবুল করব।”
(সহীহ বুখারী, হাদীস ১১৪৫)

গোপন পাপ থেকে বাঁচার উপায় : দলিল ও যুক্তি সহ ইসলামিক সমাধান