আহলুস সুন্নাত ওয়াল জামাআতের প্রকৃত আকিদাহ, ঈমান, আমল, ও ইসলামী দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে কুরআন ও হাদীসভিত্তিক প্রশ্নোত্তর
আহলুস সুন্নাত ওয়াল জামাত সম্পর্কে ৯৬টি প্রশ্নোত্তর
- আপডেট সময়ঃ ০৩:১৪:০৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৪ মে ২০২৫
- / ১০২ বার পড়া হয়েছে।
🕋 আহলুস সুন্নাত ওয়াল জামাতের অর্থ কী?
“আহলুস সুন্নাত” মানে — যারা নবী ﷺ-এর সুন্নাহ অনুসরণ করে, আর “ওয়াল জামাআত” মানে — মুসলিম উম্মাহর ঐক্যবদ্ধ দল।
📖 রেফারেন্স: নবী ﷺ বলেছেন —
“যে ব্যক্তি আমার সুন্নাহ থেকে বিমুখ হয়, সে আমার অন্তর্ভুক্ত নয়।”
— (সহিহ বুখারী, হাদীস: ৫০৬৩)
🕰️ আহলুস সুন্নাত ওয়াল জামাতের সূচনা কবে?
এটি নবী ﷺ-এর যুগ থেকেই শুরু। যখন নানা মতবাদ সৃষ্টি হয়, তখন সাহাবা ও তাদের অনুসারীরা সুন্নাহর পথে অটল থাকেন — তারাই “আহলুস সুন্নাত ওয়াল জামাআত।”
📖 রেফারেন্স: ইমাম তিরমিজি (২৬৪১) বর্ণনা করেন:
“আমার উম্মত বিভক্ত হবে ৭৩ দলে; এর মধ্যে একটিই মুক্তি পাবে — যারা আমার ও আমার সাহাবাদের পথে থাকবে।”
🕌 আহলুস সুন্নাত ওয়াল জামাত কারা?
যারা কুরআন ও সহিহ হাদীস অনুযায়ী নবী ﷺ-এর শিক্ষা ও সাহাবাদের আমল অনুসরণ করে।
📖 রেফারেন্স: সূরা আন-নিসা (৪:৫৯):
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا أَطِيعُوا اللَّهَ وَأَطِيعُوا الرَّسُولَ وَأُولِي الْأَمْرِ مِنكُمْ
“হে মুমিনগণ! তোমরা আল্লাহ, তাঁর রাসূল ও তোমাদের মধ্যে যাদের কর্তৃত্ব রয়েছে তাদের আনুগত্য করো।”
💫 আহলুস সুন্নাত ওয়াল জামাতের আকিদাহ কী?
তাদের আকিদাহ (বিশ্বাস) হলো:
-
আল্লাহ এক, অদ্বিতীয়।
-
নবী মুহাম্মদ ﷺ শেষ নবী।
-
কুরআন আল্লাহর কালাম, সৃষ্টি নয়।
-
সাহাবারা সবাই ন্যায়বান।
📖 সূরা ইখলাস (১১২:১-৪): “قُلْ هُوَ اللَّهُ أَحَدٌ …”
🌙 তারা কার অনুসারী?
তারা চার ইমামের (ইমাম আবু হানিফা, ইমাম মালিক, ইমাম শাফেয়ী, ইমাম আহমদ ইবনে হাম্বল) অনুসারী।
📖 রেফারেন্স: ইমাম আবু হানিফা বলেছেন:
“আমরা কুরআন ও সহিহ হাদীসকে আমাদের মাপকাঠি বানাই।”
— (আল-ফিকহুল আকবর)
💖 আহলুস সুন্নাত ওয়াল জামাত নবীপ্রেমকে কিভাবে দেখে?
তারা নবী ﷺ-এর প্রতি গভীর ভালোবাসা ও সম্মানকে ঈমানের অংশ মনে করে।
📖 রেফারেন্স: নবী ﷺ বলেছেন —
“তোমাদের কেউ ততক্ষণ ঈমানদার হতে পারবে না যতক্ষণ না সে আমাকে নিজের চেয়ে বেশি ভালোবাসে।”
— (সহিহ বুখারী, হাদীস: ১৫)
🕋 তারা মিলাদ উদযাপনকে কিভাবে দেখে?
যদি শিরক বা বিদআত না থাকে, বরং নবীর জীবনী স্মরণ ও দোয়া করা হয়, তবে তা মুস্তাহাব (সুপ্রশংসনীয়)।
📖 রেফারেন্স: ইমাম সুযূতি বলেন —
“মিলাদ উদযাপন নবীর প্রতি ভালোবাসার প্রকাশ।”
— (আল-হাওয়ি লিল ফাতাওয়া, খণ্ড ১)
⚖️ আহলুস সুন্নাত বিদআত সম্পর্কে কী বলে?
যে আমল কুরআন ও হাদীসে নেই এবং ধর্মে নতুন কিছু সংযোজন করে — তা বিদআত।
📖 রেফারেন্স: নবী ﷺ বলেছেন —
“যে আমাদের কাজে এমন কিছু সংযোজন করে যা আমাদের নয়, তা বাতিল।”
— (সহিহ মুসলিম, হাদীস: ১৭১৮)
🌾 সাহাবাদের প্রতি আহলুস সুন্নাতের মনোভাব কী?
তারা সকল সাহাবাকে ভালোবাসে এবং কাউকে গালি দেয় না।
📖 রেফারেন্স: সূরা আত-তাওবা (৯:১০০):
“আল্লাহ তাদের প্রতি সন্তুষ্ট, এবং তারাও তাঁর প্রতি সন্তুষ্ট।”
💀 তারা শিয়া ও খারেজিদের থেকে কীভাবে ভিন্ন?
-
শিয়ারা সাহাবাদের অবমাননা করে,
-
খারেজিরা গুনাহগার মুসলিমকে কাফির বলে।
কিন্তু আহলুস সুন্নাত সব মুসলমানকে ন্যায়ের দৃষ্টিতে দেখে এবং কুরআন-সুন্নাহর পথে চলে।
📖 রেফারেন্স: নবী ﷺ বলেছেন —
“যে আমার সাহাবাদের গালি দেয়, তার উপর আল্লাহর লানত।”
— (তাবরানী, আল-কাবীর)
🌈 আহলুস সুন্নাত ওয়াল জামাতের উদ্দেশ্য কী?
ইসলামের মূল শিক্ষা রক্ষা করা, মুসলিম উম্মাহর ঐক্য বজায় রাখা এবং বিদআত ও চরমপন্থা থেকে দূরে থাকা।
সংক্ষিপ্ত ৯৬ প্রশ্নোত্তর (উদাহরণ আকারে)
| ক্র. | প্রশ্ন | সংক্ষিপ্ত উত্তর (রেফারেন্সসহ) |
|---|---|---|
| ১ | আহলুস সুন্নাত কাদের বলে? | যারা কুরআন-হাদীস ও সাহাবাদের পথ অনুসরণ করে। (তিরমিজি ২৬৪১) |
| ২ | তারা কোন আকিদা অনুসরণ করে? | তাওহিদ, নবুয়ত, আখেরাত ও কদর বিশ্বাস। (সূরা আন-নিসা ৪:১৩৬) |
| ৩ | মিলাদ উদযাপন কি বিদআত? | যদি শিরক না থাকে, তবে অনুমোদিত। (ইমাম সুযূতি) |
| ৪ | আহলুস সুন্নাত শিয়া মতবাদকে কেন প্রত্যাখ্যান করে? | সাহাবা অবমাননার কারণে। (সূরা তাওবা ৯:১০০) |
| ৫ | আউলিয়াদের প্রতি বিশ্বাস রাখা কি বৈধ? | হ্যাঁ, যদি তাদের আল্লাহর বান্দা হিসেবে সম্মান করা হয়। (সূরা ইউনুস ১০:৬২) |
| ৬ | তারা তাওহিদ কিভাবে ব্যাখ্যা করে? | আল্লাহ এক, অংশীদারহীন। (সূরা ইখলাস) |
| ৭ | তারা কার অনুসরণে চলে? | নবী ﷺ ও সাহাবা। (বুখারী ৫০৬৩) |
| ৮ | নামাজের ধরন কেমন হওয়া উচিত? | সুন্নাহ অনুযায়ী। (সহিহ মুসলিম ৩৯২) |
| ৯ | তারা মাজারে দোয়া করা সম্পর্কে কী বলে? | মৃতকে উপাসনা নয়, বরং আল্লাহর কাছে ওসিলা বৈধ। (ইবনে তাইমিয়্যা, মাজমু’ আল-ফাতাওয়া) |
| ১০ | আহলুস সুন্নাতের শত্রু কারা? | যারা কুরআন-সুন্নাহকে বিকৃত করে। (সূরা আহজাব ৩৩:৩৬) |
প্রশ্ন ১১: আহলুস সুন্নাত ওয়াল জামাআতের প্রধান ভিত্তি কী?
উত্তর: কুরআন, সহীহ হাদীস, ইজমা (ঐক্যমত), ও কিয়াস (যুক্তিনির্ভর বিশ্লেষণ)।
📚 রেফারেন্স: আল-জাসস, আহকামুল কুরআন; ইমাম শাফেয়ী, আর-রিসালা।
প্রশ্ন ১২: “আহলুস সুন্নাত” শব্দের মানে কী?
উত্তর: “সুন্নাহর অনুসারী” — অর্থাৎ নবীজির (ﷺ) শিক্ষা ও জীবনধারাকে অনুসরণকারী সম্প্রদায়।
📚 রেফারেন্স: সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ২৫৬৪।
প্রশ্ন ১৩: “ওয়াল জামাআত” এর মানে কী?
উত্তর: “একতাবদ্ধ দল” — যারা সাহাবা, তাবেয়ীন ও সালাফদের পথে ঐক্যবদ্ধ থাকে।
📚 রেফারেন্স: তিরমিজি শরীফ, হাদীস নং ২৬৪০।
প্রশ্ন ১৪: আহলুস সুন্নাত ওয়াল জামাআতের দৃষ্টিতে তাওহীদ কী?
উত্তর: আল্লাহ এক, অদ্বিতীয় — তাঁর সত্তা, গুণাবলি, ও উপাসনা একমাত্র তাঁর জন্যই।
📖 কুরআন:
قُلْ هُوَ اللَّهُ أَحَدٌ
“বলুন, তিনি আল্লাহ, এক।” (সূরা আল-ইখলাস: ১)
প্রশ্ন ১৫: আহলুস সুন্নাত ওয়াল জামাআত নবীদের মর্যাদা সম্পর্কে কী বিশ্বাস করে?
উত্তর: সব নবীই আল্লাহর নির্বাচিত, পাপমুক্ত ও সর্বোত্তম মানুষ।
📚 রেফারেন্স: সহীহ বুখারী, হাদীস নং ৩৪১২; কুরআন ৬:৮৬।
প্রশ্ন ১৬: নবী (ﷺ)-এর পরে কোনো নবী আসবে কি?
উত্তর: না, রাসূলুল্লাহ ﷺ হচ্ছেন শেষ নবী।
📖 কুরআন:
مَّا كَانَ مُحَمَّدٌ أَبَا أَحَدٍ مِّن رِّجَالِكُمْ وَلَـٰكِن رَّسُولَ اللَّهِ وَخَاتَمَ النَّبِيِّينَ
“মুহাম্মদ তোমাদের পুরুষদের কারো পিতা নন; বরং তিনি আল্লাহর রাসূল এবং নবীদের শেষ।” (সূরা আহযাব: ৪০)
প্রশ্ন ১৭: আহলুস সুন্নাত ওয়াল জামাআতের মতে সাহাবাদের মর্যাদা কেমন?
উত্তর: সাহাবারা ইসলামের শ্রেষ্ঠ প্রজন্ম, তাদের ভালোবাসা ঈমানের অংশ।
📚 রেফারেন্স: সহীহ বুখারী, হাদীস নং ৩৬৭৩।
প্রশ্ন ১৮: চার ইমামের ভূমিকা কী?
উত্তর: তাঁরা শরীয়তের ব্যাখ্যাকারী — ইমাম আবু হানিফা, মালিক, শাফেয়ী, ও আহমদ ইবনে হাম্বল।
📚 রেফারেন্স: ইমাম যাহাবী, সিয়ারু আ’লামিন নুবালা।
প্রশ্ন ১৯: আহলুস সুন্নাত ওয়াল জামাআত কাদের অনুসরণ করে?
উত্তর: সাহাবা, তাবেয়ীন, তাবে-তাবেয়ীন এবং সালাফে সালেহিনদের পথ।
প্রশ্ন ২০: “বেদআত” বা নতুন ধর্মীয় উদ্ভাবন সম্পর্কে তাদের অবস্থান কী?
উত্তর: যা কুরআন ও সুন্নাহর পরিপন্থী তা বেদআত এবং পরিত্যাজ্য।
📚 রেফারেন্স: সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ৮৬৭।
প্রশ্ন ২১: আহলুস সুন্নাত কাদের বিদআতী বলে?
উত্তর: যারা কুরআন ও সহীহ হাদীসের বিপরীতে নতুন বিশ্বাস বা আমল প্রবর্তন করে।
প্রশ্ন ২২: আহলুস সুন্নাত ওয়াল জামাআতের মতে তাকদির বা ভাগ্য কীভাবে বোঝা হয়?
উত্তর: সবকিছু আল্লাহর জ্ঞানে নির্ধারিত, কিন্তু মানুষকে কাজের স্বাধীনতা দেওয়া হয়েছে।
📚 রেফারেন্স: সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ২৬৫৩।
প্রশ্ন ২৩: আহলুস সুন্নাত কিয়ামতের দিনে আল্লাহর দর্শন সম্পর্কে কী বলে?
উত্তর: মুমিনরা জান্নাতে আল্লাহকে দেখবে — এটি কুরআন ও হাদীসে প্রমাণিত।
📖 কুরআন:
وُجُوهٌ يَوْمَئِذٍ نَّاضِرَةٌ إِلَىٰ رَبِّهَا نَاظِرَةٌ
“সেদিন কিছু মুখ উজ্জ্বল হবে; তারা তাদের প্রভুর দিকে তাকিয়ে থাকবে।” (সূরা কিয়ামাহ: ২২–২৩)
প্রশ্ন ২৪: আহলুস সুন্নাত ওয়াল জামাআতের দৃষ্টিতে ঈমানের প্রকৃতি কী?
উত্তর: ঈমান হলো হৃদয়ে বিশ্বাস, মুখে স্বীকার ও অঙ্গপ্রত্যঙ্গ দ্বারা আমল।
📚 রেফারেন্স: সহীহ বুখারী, হাদীস নং ৯।
প্রশ্ন ২৫: ঈমান বাড়ে ও কমে কি?
উত্তর: হ্যাঁ, আল্লাহর আনুগত্যে ঈমান বৃদ্ধি পায়, আর পাপে কমে।
📖 কুরআন:
لِيَزْدَادُوا إِيمَانًا مَّعَ إِيمَانِهِمْ
“তাদের ঈমানের সাথে ঈমান বৃদ্ধি করার জন্য।” (সূরা ফাতহ: ৪)প্রশ্ন ২৬: আল্লাহর আরশে অবস্থান সম্পর্কে আহলুস সুন্নাতের বিশ্বাস কী?
উত্তর: আল্লাহ আরশের ওপর রয়েছেন, কিন্তু তাঁর জ্ঞান সর্বত্র পরিব্যাপ্ত।
📖 কুরআন:الرَّحْمَٰنُ عَلَى الْعَرْشِ اسْتَوَىٰ
“পরম করুণাময় আরশের উপর প্রতিষ্ঠিত।” (সূরা ত্বাহা: ৫)
প্রশ্ন ২৭: আল্লাহর হাত, মুখ, চোখ ইত্যাদি সম্পর্কে কেমন বিশ্বাস রাখতে হবে?
উত্তর: এসব গুণাবলি আল্লাহর জন্য প্রমাণিত, তবে মানুষের মতো নয়।
📚 রেফারেন্স: ইমাম মালিক (রহঃ) বলেছেন: “ইস্তিওয়া জানা নয়, বিশ্বাস করা ফরজ।” (আল-আকিদা আত-তাহাবিয়্যা)
প্রশ্ন ২৮: আহলুস সুন্নাত ওয়াল জামাআত শাফাআত (সুপারিশ) সম্পর্কে কী বিশ্বাস করে?
উত্তর: কিয়ামতের দিনে রাসূল ﷺ এবং অন্য নবীগণ মুমিনদের জন্য সুপারিশ করবেন আল্লাহর অনুমতিতে।
📖 কুরআন:مَن ذَا الَّذِي يَشْفَعُ عِندَهُ إِلَّا بِإِذْنِهِ
“তাঁর অনুমতি ছাড়া কেউ সুপারিশ করতে পারবে না।” (সূরা বাকারা: ২৫৫)
প্রশ্ন ২৯: কবরের আজাব কি সত্য?
উত্তর: হ্যাঁ, কবরের আজাব বাস্তব এবং এটি কুরআন ও হাদীসে প্রমাণিত।
📚 রেফারেন্স: সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ২৮৬৯; সূরা আত-তাকাসুর: ৭–৮।
প্রশ্ন ৩০: আহলুস সুন্নাতের মতে ফেরেশতা কাদের বলা হয়?
উত্তর: আল্লাহ নূর থেকে তাদের সৃষ্টি করেছেন, তারা আল্লাহর নির্দেশ ছাড়া কিছুই করেন না।
📖 কুরআন:لَا يَعْصُونَ اللَّهَ مَا أَمَرَهُمْ
“তারা আল্লাহর নির্দেশ অমান্য করে না।” (সূরা তাহরিম: ৬)
প্রশ্ন ৩১: আহলুস সুন্নাতের মতে জিনের অস্তিত্ব আছে কি?
উত্তর: হ্যাঁ, জিন বাস্তব এবং তাদের সৃষ্টি ধোঁয়াহীন আগুন থেকে।
📖 কুরআন:وَخَلَقَ الْجَانَّ مِن مَّارِجٍ مِّن نَّارٍ
“আর তিনি জিন সৃষ্টি করেছেন আগুনের শিখা থেকে।” (সূরা রহমান: ১৫)
প্রশ্ন ৩২: দাজ্জাল সম্পর্কে আহলুস সুন্নাতের বিশ্বাস কী?
উত্তর: দাজ্জাল কিয়ামতের অন্যতম বড় ফিতনা এবং সে একচোখা মানুষ হবে।
📚 রেফারেন্স: সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ২৯৩৭।
প্রশ্ন ৩৩: ইমাম মাহদী সম্পর্কে তাদের বিশ্বাস কী?
উত্তর: ইমাম মাহদী হবেন আহলে বায়তের একজন, যিনি পৃথিবীতে ন্যায় প্রতিষ্ঠা করবেন।
📚 রেফারেন্স: আবু দাউদ, হাদীস নং ৪২৮২; ইবনে মাজাহ, হাদীস নং ৪০৮৫।
প্রশ্ন ৩৪: ঈসা (আঃ) কি আবার দুনিয়ায় আসবেন?
উত্তর: হ্যাঁ, কিয়ামতের পূর্বে তিনি অবতীর্ণ হবেন এবং দাজ্জালকে হত্যা করবেন।
📚 রেফারেন্স: সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ২৯৩৪।
প্রশ্ন ৩৫: আহলুস সুন্নাত কিয়ামতের প্রতি কী বিশ্বাস রাখে?
উত্তর: কিয়ামত অনিবার্য, আল্লাহর হুকুমে হবে।
📖 কুরআন:إِنَّ السَّاعَةَ لَآتِيَةٌ لَّا رَيْبَ فِيهَا
“নিশ্চয়ই কিয়ামত আসবে, এতে সন্দেহ নেই।” (সূরা হাজ্জ: ৭)
প্রশ্ন ৩৬: আহলুস সুন্নাতের মতে আল্লাহর দেখা কি সম্ভব হবে?
উত্তর: হ্যাঁ, জান্নাতে মুমিনরা আল্লাহর দর্শন লাভ করবে।
📚 রেফারেন্স: সহীহ বুখারী, হাদীস নং ৭৪৩৭।
প্রশ্ন ৩৭: আহলুস সুন্নাতের দৃষ্টিতে আমলের গ্রহণযোগ্যতার শর্ত কী?
উত্তর: নিঃস্বার্থভাবে শুধুমাত্র আল্লাহর জন্য এবং রাসূল ﷺ-এর সুন্নাহ অনুযায়ী হতে হবে।
📖 কুরআন:فَمَن كَانَ يَرْجُو لِقَاءَ رَبِّهِ فَلْيَعْمَلْ عَمَلًا صَالِحًا
“যে তার প্রভুর সাক্ষাৎ আশা করে, সে যেন সৎকাজ করে।” (সূরা কাহফ: ১১০)
প্রশ্ন ৩৮: আহলুস সুন্নাত ওয়াল জামাআত কোন ফেরকা নয় বরং কী?
উত্তর: এটি ফেরকা নয়, বরং ইসলামের মূলধারা যা নবী ﷺ ও সাহাবাদের পথ।
প্রশ্ন ৩৯: আহলুস সুন্নাত কাদেরকে গোমরাহ (ভ্রান্ত) বলে?
উত্তর: যারা কুরআন ও সহীহ হাদীসের বিপরীতে নতুন বিশ্বাস স্থাপন করে।
প্রশ্ন ৪০: কবর জিয়ারত সম্পর্কে তাদের মত কী?
উত্তর: কবর জিয়ারত বৈধ, যদি সেখানে শিরক বা বিদআত না থাকে।
📚 রেফারেন্স: সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ৯৭৭।
প্রশ্ন ৪১: আহলুস সুন্নাত কি নবীজির জন্মদিন পালন করে?
উত্তর: যদি তা নবীর ভালোবাসা, কৃতজ্ঞতা ও দ্বীনি শিক্ষা স্মরণের উদ্দেশ্যে হয় — তবে তা মুস্তাহাব।
📚 রেফারেন্স: ইমাম সুয়ুতি, আল-হাওয়ী লিল ফাতাওয়া।
প্রশ্ন ৪২: আহলুস সুন্নাতের দৃষ্টিতে আলেমদের মান কেমন?
উত্তর: আলেমরা নবীদের উত্তরসূরি।
📚 রেফারেন্স: আবু দাউদ, হাদীস নং ৩৬৪১।
প্রশ্ন ৪৩: কুরআনের ব্যাখ্যা কারা দিতে পারেন?
উত্তর: যারা তাফসীর, হাদীস, আরবি ভাষা ও উসূলুল ফিকহে পারদর্শী আলেম।
প্রশ্ন ৪৪: আহলুস সুন্নাতের দৃষ্টিতে “ইস্তেগাসা” বা সাহায্য চাওয়া কেমন?
উত্তর: কেবল আল্লাহর কাছে সাহায্য প্রার্থনা বৈধ; কিন্তু আল্লাহর প্রিয় বান্দাদের মাধ্যমে দোয়া করা জায়েয।
📚 রেফারেন্স: সূরা মায়িদা: ৩৫।
প্রশ্ন ৪৫: আহলুস সুন্নাত কি তাওসুলে বিশ্বাস করে?
উত্তর: হ্যাঁ, আল্লাহর কাছে দোয়া করার সময় নবী বা নেক বান্দার মর্যাদা দ্বারা তাওসুল করা বৈধ।
📚 রেফারেন্স: সহীহ বুখারী, বাবুল ইস্তিসকা।
প্রশ্ন ৪৬: আহলুস সুন্নাতে কিয়াস বা যুক্তিনির্ভর ব্যাখ্যার স্থান আছে কি?
উত্তর: হ্যাঁ, শরিয়তের মূলনীতির সঙ্গে বিরোধ না করলে কিয়াস গ্রহণযোগ্য।
প্রশ্ন ৪৭: আহলুস সুন্নাতের মতে সালাফ কাদের বলা হয়?
উত্তর: নবী ﷺ-এর যুগ থেকে তৃতীয় প্রজন্ম পর্যন্ত মুসলমানদের সালাফ বলা হয়।
প্রশ্ন ৪৮: ইখলাস বা একনিষ্ঠতার গুরুত্ব কী?
উত্তর: ইখলাস ছাড়া কোনো আমল আল্লাহর দরবারে গ্রহণযোগ্য নয়।
📖 কুরআন:وَمَا أُمِرُوا إِلَّا لِيَعْبُدُوا اللَّهَ مُخْلِصِينَ
“তারা শুধু আল্লাহকে একনিষ্ঠভাবে উপাসনা করার আদেশ পেয়েছে।” (সূরা বাইয়্যিনাহ: ৫)
প্রশ্ন ৪৯: নবীজির মিরাজ সম্পর্কে আহলুস সুন্নাতের বিশ্বাস কী?
উত্তর: মিরাজ ছিল বাস্তব, শরীর ও আত্মা সহকারে।
📚 রেফারেন্স: সহীহ বুখারী, হাদীস নং ৩৫৯।
প্রশ্ন ৫০: আহলুস সুন্নাতের মতে মুসলমানদের ঐক্য কেন গুরুত্বপূর্ণ?
উত্তর: বিভাজন উম্মাহর ক্ষতি করে; ঐক্যই ঈমানের প্রতীক।
📖 কুরআন:وَاعْتَصِمُوا بِحَبْلِ اللَّهِ جَمِيعًا
“তোমরা সবাই আল্লাহর রজ্জু দৃঢ়ভাবে আঁকড়ে ধর।” (সূরা আলে ইমরান: ১০৩)
প্রশ্ন ৫১: আহলুস সুন্নাত ওয়াল জামাআত শিয়াদের থেকে কেন আলাদা?
উত্তর: শিয়ারা সাহাবাদের নিন্দা করে ও ইমামতকে ঈমানের অংশ মনে করে, যা কুরআন-সুন্নাহর বিরোধী। আহলুস সুন্নাত সাহাবাদের সম্মান করে ও তাদের সবাইকে মুসলমান মনে করে।
📚 রেফারেন্স: সহীহ বুখারী, হাদীস নং ৩৬৭৩; ইমাম তাহাবী, আকীদাহ তাহাবিয়্যাহ।
প্রশ্ন ৫২: খারেজিদের সঙ্গে আহলুস সুন্নাতের পার্থক্য কী?
উত্তর: খারেজিরা বড় গোনাহে কাফির বলে, কিন্তু আহলুস সুন্নাত বলে — বড় গোনাহের পরও সে মুমিন, তবে ফাসিক।
📚 রেফারেন্স: সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ১০৬।
প্রশ্ন ৫৩: আহলুস সুন্নাতের মতে ইসলামী নেতৃত্ব কেমন হওয়া উচিত?
উত্তর: ন্যায়, পরামর্শ ও শরীয়ত-ভিত্তিক শাসন কায়েম করতে সক্ষম ব্যক্তিই নেতৃত্বের যোগ্য।
📖 কুরআন:وَأَمْرُهُمْ شُورَى بَيْنَهُمْ
“তাদের কাজ পরামর্শের মাধ্যমে পরিচালিত হয়।” (সূরা শূরা: ৩৮)
প্রশ্ন ৫৪: আহলুস সুন্নাত ওয়াল জামাআতের দৃষ্টিতে শরীয়ত ও তরিকত কি আলাদা?
উত্তর: না, তরিকত হলো শরীয়তের বাস্তবায়ন। দুটিই একে অপরের পরিপূরক।
প্রশ্ন ৫৫: আউলিয়ায়ে কেরাম সম্পর্কে আহলুস সুন্নাতের বিশ্বাস কী?
উত্তর: তারা আল্লাহর নিকটবর্তী বান্দা, তাঁদের মাধ্যমে আল্লাহর রহমত নাযিল হয়। তবে উপাসনা শুধুমাত্র আল্লাহর জন্যই।
📚 রেফারেন্স: সূরা ইউনুস: ৬২–৬৩।
প্রশ্ন ৫৬: আহলুস সুন্নাতের মতে মুজাযা (কারামাত) কী?
উত্তর: নেক বান্দাদের দ্বারা আল্লাহর অনুমতিতে সংঘটিত অলৌকিক ঘটনা হলো কারামাত।
📚 রেফারেন্স: ইবনে তাইমিয়া, আল-ফুরকান বাইন আওলিয়াউর রহমান ও আওলিয়াউশ শায়তান।
প্রশ্ন ৫৭: আহলুস সুন্নাতের মতে ইলমে গায়েব কার আছে?
উত্তর: সম্পূর্ণ গায়েবের জ্ঞান কেবল আল্লাহর, তবে তিনি যাকে চান কিছু অংশ জানিয়ে দেন।
📖 কুরআন:وَعِندَهُ مَفَاتِحُ الْغَيْبِ
“গায়েবের চাবি কেবল তাঁরই হাতে।” (সূরা আন’আম: ৫৯)
প্রশ্ন ৫৮: আহলুস সুন্নাতের মতে দোয়া কার কাছে করা উচিত?
উত্তর: কেবল আল্লাহর কাছেই দোয়া বৈধ।
📖 কুরআন:وَقَالَ رَبُّكُمُ ادْعُونِي أَسْتَجِبْ لَكُمْ
“তোমাদের প্রভু বলেন, আমাকেই ডাকো, আমি সাড়া দেব।” (সূরা মুমিন: ৬০)
প্রশ্ন ৫৯: নবীজির শাফাআত কি সব মুসলমানের জন্য হবে?
উত্তর: মূলত ঈমানদারদের জন্য, তবে কিছু পাপী মুমিনও তাঁর শাফাআতে জান্নাতে প্রবেশ করবে।
📚 রেফারেন্স: সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ১৯৩।
প্রশ্ন ৬০: আহলুস সুন্নাতের মতে “ইস্তেগফার” বা ক্ষমা চাওয়া কেমন হওয়া উচিত?
উত্তর: আল্লাহর সামনে বিনম্রভাবে, তাওবার সঙ্গে এবং সুন্নাহ অনুযায়ী করতে হবে।
📖 কুরআন:وَمَن يَغْفِرُ الذُّنُوبَ إِلَّا اللَّهُ
“আল্লাহ ব্যতীত কে আছে যে পাপ ক্ষমা করে?” (সূরা আলে ইমরান: ১৩৫)
প্রশ্ন ৬১: আহলুস সুন্নাত কিয়ামতের নিদর্শনগুলোতে বিশ্বাস করে কি?
উত্তর: হ্যাঁ, ছোট ও বড় নিদর্শন — দুটোতেই ঈমান রাখতে হবে।
📚 রেফারেন্স: সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ২৯০১।
প্রশ্ন ৬২: আহলুস সুন্নাতের মতে মুসলমানদের বিভক্তি কেন হয়েছে?
উত্তর: কুরআন-সুন্নাহর সঠিক ব্যাখ্যা থেকে বিচ্যুতি ও ব্যক্তিপূজার কারণে।
প্রশ্ন ৬৩: আহলুস সুন্নাত মুসলমানদের মধ্যে ভ্রাতৃত্ব কিভাবে রক্ষা করে?
উত্তর: পরস্পরের প্রতি দয়া, ক্ষমা, সহমর্মিতা ও সালাম প্রচারের মাধ্যমে।
📚 রেফারেন্স: সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ২৫৬৪।
প্রশ্ন ৬৪: আহলুস সুন্নাতে সালাম প্রচারের গুরুত্ব কী?
উত্তর: এটি ভালোবাসা ও ঐক্যের প্রতীক।
📚 রেফারেন্স: সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ৫৪।
প্রশ্ন ৬৫: আহলুস সুন্নাতের মতে কুরআনের মর্যাদা কেমন?
উত্তর: এটি আল্লাহর কালাম, সৃষ্টি নয়, এবং পরিপূর্ণ হিদায়াতের উৎস।
📖 কুরআন:لَا يَأْتِيهِ الْبَاطِلُ مِن بَيْنِ يَدَيْهِ
“এর মধ্যে কোনো মিথ্যা প্রবেশ করতে পারে না।” (সূরা ফুসসিলাত: ৪২)
প্রশ্ন ৬৬: হাদীসের মর্যাদা সম্পর্কে আহলুস সুন্নাতের অবস্থান কী?
উত্তর: হাদীস কুরআনের ব্যাখ্যা ও শরিয়তের দ্বিতীয় উৎস।
📚 রেফারেন্স: সহীহ বুখারী, হাদীস নং ৭৩২০।
প্রশ্ন ৬৭: আহলুস সুন্নাতের মতে বিদআতের পরিণাম কী?
উত্তর: বিদআত আল্লাহর কাছে গ্রহণযোগ্য নয়; বরং তা গোমরাহির পথ।
📚 রেফারেন্স: সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ৮৬৭।
প্রশ্ন ৬৮: আহলুস সুন্নাতের মতে সঠিক আমল কীভাবে হবে?
উত্তর: শরিয়তের নির্দেশ অনুযায়ী, রিয়া বা দম্ভ ছাড়া।
প্রশ্ন ৬৯: নবীপ্রেম কীভাবে প্রকাশ করতে হবে?
উত্তর: তাঁর সুন্নাহর অনুসরণ, দরূদ পাঠ ও আদর্শে চলার মাধ্যমে।
📖 কুরআন:قُلْ إِن كُنتُمْ تُحِبُّونَ اللَّهَ فَاتَّبِعُونِي
“তোমরা যদি আল্লাহকে ভালোবাসো, তবে আমার অনুসরণ কর।” (সূরা আলে ইমরান: ৩১)
প্রশ্ন ৭০: আহলুস সুন্নাত ওয়াল জামাআতের মতে আখলাক বা চরিত্রের গুরুত্ব কী?
উত্তর: চরিত্র হলো ঈমানের অংশ।
📚 রেফারেন্স: তিরমিজি, হাদীস নং ২০০৩।
প্রশ্ন ৭১: কিয়ামতের দিনে প্রথম প্রশ্ন কী হবে?
উত্তর: সালাত (নামাজ) সম্পর্কে।
📚 রেফারেন্স: তিরমিজি, হাদীস নং ৪১৩।
প্রশ্ন ৭২: আহলুস সুন্নাতের মতে নামাজ ত্যাগ করলে কী হয়?
উত্তর: এটি বড় গোনাহ এবং ঈমান নষ্টের ঝুঁকি সৃষ্টি করে।
প্রশ্ন ৭৩: আহলুস সুন্নাত কি চার মাযহাব মানে?
উত্তর: হ্যাঁ, চারটি মাযহাবই হক — হানাফি, মালিকি, শাফেয়ী, হাম্বলি।
প্রশ্ন ৭৪: আহলুস সুন্নাতের মতে ইজতিহাদ কাদের জন্য বৈধ?
উত্তর: কেবল যোগ্য আলেমদের জন্য, যারা কুরআন-হাদীসে দক্ষ।
প্রশ্ন ৭৫: আহলুস সুন্নাতের মতে মুসলিম সমাজে রাজনীতি কেমন হওয়া উচিত?
উত্তর: শরীয়তনির্ভর, ন্যায়পরায়ণ ও মানবিক নীতি অনুসারে।
প্রশ্ন ৭৬: আহলুস সুন্নাত কেন নবীজির পরিবারকে ভালোবাসে?
উত্তর: তারা নবীর অংশ; তাঁদের ভালোবাসা ঈমানের অংশ।
📚 রেফারেন্স: সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ২৪০৮।
প্রশ্ন ৭৭: আহলুস সুন্নাতের মতে সঠিক তাসাউফ কী?
উত্তর: আত্মশুদ্ধি ও আল্লাহভীতি অর্জনের মাধ্যমে অন্তর পরিশুদ্ধ করা।
প্রশ্ন ৭৮: আহলুস সুন্নাতের দৃষ্টিতে অহংকার কেমন?
উত্তর: অহংকার ঈমান ধ্বংস করে দেয়।
📚 রেফারেন্স: সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ৯১।
প্রশ্ন ৭৯: জিকিরের গুরুত্ব কী?
উত্তর: জিকির অন্তরকে প্রশান্ত করে ও ঈমান দৃঢ় করে।
📖 কুরআন:أَلَا بِذِكْرِ اللَّهِ تَطْمَئِنُّ الْقُلُوبُ
“নিশ্চয়ই আল্লাহর স্মরণে অন্তর প্রশান্ত হয়।” (সূরা রা’দ: ২৮)
প্রশ্ন ৮০: আহলুস সুন্নাতের মতে কবর আজাব থেকে বাঁচার উপায় কী?
উত্তর: নামাজ, তাওবা, দোয়া ও কবরের আজাব থেকে আল্লাহর নিকট আশ্রয় চাওয়া।
প্রশ্ন ৮১: আহলুস সুন্নাত কিয়ামতের দিন আল্লাহর হিসাব সম্পর্কে কী বলে?
উত্তর: প্রতিটি কাজের হিসাব নেওয়া হবে, আল্লাহ ন্যায়বিচার করবেন।
📖 কুরআন:فَمَن يَعْمَلْ مِثْقَالَ ذَرَّةٍ خَيْرًا يَرَهُ
“যে অণু পরিমাণ সৎকাজ করবে, তা দেখবে।” (সূরা যিলযাল: ৭)
প্রশ্ন ৮২: আহলুস সুন্নাতের মতে জান্নাত-জাহান্নাম কি এখনই সৃষ্টি আছে?
উত্তর: হ্যাঁ, দুটোই বর্তমানে বিদ্যমান।
📚 রেফারেন্স: সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ২৮৪২।
প্রশ্ন ৮৩: আহলুস সুন্নাতের মতে পাপী মুসলমানের পরিণতি কী?
উত্তর: আল্লাহ চাইলে ক্ষমা করবেন, নইলে জাহান্নামে শাস্তি দিয়ে জান্নাতে প্রবেশ করাবেন।
প্রশ্ন ৮৪: আহলুস সুন্নাত ওয়াল জামাআতের মতে আল্লাহর দয়া কতটা বিস্তৃত?
উত্তর: আল্লাহর দয়া তাঁর ক্রোধের চেয়ে বিশাল।
📚 রেফারেন্স: সহীহ বুখারী, হাদীস নং ৭৪০৪।
প্রশ্ন ৮৫: আহলুস সুন্নাতের মতে ইসলামী ভ্রাতৃত্ব ভাঙা কি গোনাহ?
উত্তর: হ্যাঁ, মুসলমানের সঙ্গে সম্পর্কচ্ছেদ করা হারাম।
📚 রেফারেন্স: সহীহ বুখারী, হাদীস নং ৬০৬৫।
প্রশ্ন ৮৬: আহলুস সুন্নাতের মতে রিয়া বা লোকদেখানো আমল কেমন?
উত্তর: এটি শিরকের ছোট রূপ, আমল নষ্ট করে দেয়।
📚 রেফারেন্স: সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ২৯৮৭।
প্রশ্ন ৮৭: আহলুস সুন্নাতের মতে আল্লাহর রহমতের আশা ও শাস্তির ভয় — দুটোই রাখা কেন জরুরি?
উত্তর: কারণ এ দুটো ভারসাম্যই ঈমানকে দৃঢ় রাখে।
প্রশ্ন ৮৮: আহলুস সুন্নাতের মতে ইসলাম কি মধ্যপন্থা?
উত্তর: হ্যাঁ, চরমপন্থা বা অবহেলা নয় — ইসলাম হচ্ছে ‘উম্মাতান ওয়াসাতান’।
📖 কুরআন:وَكَذَٰلِكَ جَعَلْنَاكُمْ أُمَّةً وَسَطًا
“আমি তোমাদের করেছি মধ্যপন্থী উম্মত।” (সূরা বাকারা: ১৪৩)
প্রশ্ন ৮৯: আহলুস সুন্নাতের মতে কুরআন পাঠের পুরস্কার কী?
উত্তর: প্রতিটি হরফে দশটি নেকি।
📚 রেফারেন্স: তিরমিজি, হাদীস নং ২৯১০।
প্রশ্ন ৯০: আহলুস সুন্নাতের মতে কিয়ামতের আগে মাহদী ও ঈসা (আঃ)-এর যুগে ইসলাম কেমন হবে?
উত্তর: ইসলাম পুনরায় প্রতিষ্ঠিত হবে, ন্যায়বিচার ফিরে আসবে।
প্রশ্ন ৯১: আহলুস সুন্নাতের মতে আল্লাহর আদেশ পালন না করলে কী হয়?
উত্তর: এটি গোনাহ, তওবা না করলে আখিরাতে শাস্তি হতে পারে।
প্রশ্ন ৯২: আহলুস সুন্নাতের মতে হিজাব বা পর্দার গুরুত্ব কী?
উত্তর: এটি নারীর মর্যাদা ও পবিত্রতার প্রতীক।
📖 কুরআন:وَلَا يُبْدِينَ زِينَتَهُنَّ إِلَّا مَا ظَهَرَ مِنْهَا
“তারা যেন তাদের সৌন্দর্য প্রকাশ না করে।” (সূরা নূর: ৩১)
প্রশ্ন ৯৩: আহলুস সুন্নাতের মতে সুন্নাহ মানা কেন ফরজ?
উত্তর: কারণ নবী ﷺ-এর আদেশ অমান্য করা আল্লাহর অবাধ্যতা।
📖 কুরআন:مَّن يُطِعِ الرَّسُولَ فَقَدْ أَطَاعَ اللَّهَ
“যে রাসূলের আনুগত্য করে, সে আল্লাহরই আনুগত্য করে।” (সূরা নিসা: ৮০)
প্রশ্ন ৯৪: আহলুস সুন্নাতের মতে বিদায়ের সালাম না দেওয়া কি গোনাহ?
উত্তর: হ্যাঁ, এটি সুন্নাহ বিরোধী।
প্রশ্ন ৯৫: আহলুস সুন্নাতের মতে নামাজে দেরি করা কেমন?
উত্তর: এটি নিন্দনীয় কাজ, সালাত প্রথম সময়ে আদায় করা উত্তম।
📚 রেফারেন্স: সহীহ বুখারী, হাদীস নং ৫৫৪।
প্রশ্ন ৯৬: আহলুস সুন্নাতের মতে কিয়ামতের দিনে ওজন করা হবে কী?
উত্তর: আমল ও আমলনামা — উভয়ই ওজন করা হবে।
📖 কুরআন:فَمَن ثَقُلَتْ مَوَازِينُهُ فَهُوَ فِي عِيشَةٍ رَّاضِيَةٍ
“










