বিদেশে যাওয়ার আগে প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ, PDO সার্টিফিকেট এবং প্রবাসী আয়ের গুরুত্ব নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা
আমি প্রবাসী ট্রেনিং সার্টিফিকেট ,আমি প্রবাসী pdo ও প্রবাসী-প্রেরিত অর্থ
- আপডেট সময়ঃ ০৪:২১:৪১ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৯ অক্টোবর ২০২৫
- / ৫৫ বার পড়া হয়েছে।
আমি প্রবাসী” প্ল্যাটফর্ম কী, আমি প্রবাসী ট্রেনিং সার্টিফিকেট কী, এই সার্টিফিকেট কেন প্রয়োজন, ট্রেনিং সার্টিফিকেটের ধরন, প্রশিক্ষণের সময়কাল ও বিষয়বস্তু, কীভাবে আমি প্রবাসী ট্রেনিং সার্টিফিকেট পাওয়া যায়, অনলাইনে সার্টিফিকেট যাচাইয়ের নিয়ম, আমি প্রবাসী PDO (Pre-Departure Orientation) কী, PDO প্রশিক্ষণের উদ্দেশ্য ও উপকারিতা, PDO কোর্সে কী শেখানো হয়, PDO সার্টিফিকেট সংগ্রহের প্রক্রিয়া, প্রবাসী প্রেরিত অর্থ কী, বাংলাদেশে প্রবাসী আয়ের ভূমিকা, রেমিট্যান্স পাঠানোর সঠিক ও নিরাপদ উপায়, অবৈধ চ্যানেল (হুন্ডি) পরিহার করার গুরুত্ব, প্রবাসী আয়ের বিনিয়োগে সরকারের উদ্যোগ, আমি প্রবাসী অ্যাপ ও অনলাইন সেবার ভূমিকা,
আমি প্রবাসী” হলো প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের একটি ডিজিটাল সেবা প্ল্যাটফর্ম, যা প্রবাসী শ্রমিকদের তথ্যভিত্তিক সহায়তা প্রদান করে। এর ওয়েবসাইট: www.amiprobashi.com এবং মোবাইল অ্যাপও রয়েছে।
প্রবাসী ট্রেনিং সার্টিফিকেট কী
“আমি প্রবাসী ট্রেনিং সার্টিফিকেট” হলো সরকার অনুমোদিত প্রশিক্ষণ সম্পন্ন করার প্রমাণপত্র, যা বিদেশে যাওয়ার আগে শ্রমিকদের দেওয়া হয়। এটি BMET (Bureau of Manpower, Employment and Training) কর্তৃক স্বীকৃত।
এই সার্টিফিকেট কেন প্রয়োজন
এই সার্টিফিকেট ছাড়া বিদেশে চাকরির জন্য ভিসা ও ইমিগ্রেশন অনুমোদন পাওয়া কঠিন। এটি প্রমাণ করে যে প্রার্থী নির্দিষ্ট কাজের জন্য প্রয়োজনীয় দক্ষতা অর্জন করেছেন এবং বিদেশে দায়িত্ব পালন করতে সক্ষম।
ট্রেনিং সার্টিফিকেটের ধরন
-
কারিগরি প্রশিক্ষণ সার্টিফিকেট – যেমন ইলেকট্রিশিয়ান, প্লাম্বার, ওয়েল্ডার ইত্যাদি
-
ভাষা প্রশিক্ষণ সার্টিফিকেট – যেমন আরবি, কোরিয়ান, মালয়, জাপানি ভাষা
-
PDO (Pre-Departure Orientation) সার্টিফিকেট – বিদেশ যাত্রার আগে প্রয়োজনীয় সামাজিক ও আইনগত শিক্ষা
প্রশিক্ষণের সময়কাল ও বিষয়বস্তু
সাধারণত ১ সপ্তাহ থেকে ৩ মাস মেয়াদী এই কোর্সে শেখানো হয়:
-
বিদেশি সংস্কৃতি ও নিয়মকানুন
-
শ্রমিক অধিকার ও নিরাপত্তা
-
ব্যাংকিং, রেমিট্যান্স ও যোগাযোগ
-
স্বাস্থ্য ও জরুরি চিকিৎসা
কীভাবে আমি প্রবাসী ট্রেনিং সার্টিফিকেট পাওয়া যায়
১. amiprobashi.com ওয়েবসাইটে লগইন করুন
২. নিজের প্রোফাইল তৈরি করুন
৩. প্রশিক্ষণ কেন্দ্র ও কোর্স নির্বাচন করুন
৪. অনলাইন আবেদন জমা দিন
৫. প্রশিক্ষণ সম্পন্ন হলে BMET সার্টিফিকেট ইস্যু করে
অনলাইনে সার্টিফিকেট যাচাইয়ের নিয়ম
১. bmet.gov.bd বা amiprobashi.com খুলুন
২. “Certificate Verification” অপশন নির্বাচন করুন
৩. সার্টিফিকেট নম্বর দিন
৪. তথ্য সঠিক হলে সার্টিফিকেটের বিস্তারিত দেখা যাবে
আমি প্রবাসী PDO (Pre-Departure Orientation) কী
PDO হলো “Pre-Departure Orientation” — অর্থাৎ বিদেশে যাওয়ার আগে প্রবাসী শ্রমিকদের মৌলিক শিক্ষা ও দিকনির্দেশনা দেওয়া। এটি প্রতিটি বিদেশগামী শ্রমিকের জন্য বাধ্যতামূলক।
প্রশিক্ষণের উদ্দেশ্য ও উপকারিতা
PDO প্রশিক্ষণের মূল উদ্দেশ্য হলো শ্রমিকদের সচেতন ও আত্মনির্ভর করা।
উপকারিতা:
-
বিদেশের আইন, সংস্কৃতি ও শ্রমনীতি জানা
-
প্রতারণা থেকে রক্ষা পাওয়া
-
রেমিট্যান্স পাঠানোর বৈধ পদ্ধতি শেখা
PDO কোর্সে কী শেখানো হয়
-
বিদেশি দেশ অনুযায়ী আচরণবিধি
-
ইমিগ্রেশন ও ভিসা প্রক্রিয়া
-
কর্মস্থলে নিরাপত্তা
-
আর্থিক ব্যবস্থাপনা ও রেমিট্যান্স পাঠানো
-
জরুরি যোগাযোগ ও এম্বাসি হেল্পলাইন ব্যবহার
সার্টিফিকেট সংগ্রহের প্রক্রিয়া
১. “আমি প্রবাসী” অ্যাপ বা ওয়েবসাইটে নিবন্ধন করুন
২. নিকটস্থ BMET বা অনুমোদিত প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে যোগ দিন
৩. প্রশিক্ষণ সম্পন্ন হলে সার্টিফিকেট স্বয়ংক্রিয়ভাবে আপনার অ্যাকাউন্টে যুক্ত হবে
প্রবাসী প্রেরিত অর্থ কী
প্রবাসী প্রেরিত অর্থ (Remittance) হলো বিদেশে কর্মরত বাংলাদেশিদের পাঠানো অর্থ, যা ব্যাংক বা মানি ট্রান্সফার চ্যানেলের মাধ্যমে দেশে আসে।
এই অর্থ বাংলাদেশের অর্থনীতিতে বিশাল ভূমিকা রাখে।
বাংলাদেশে প্রবাসী আয়ের ভূমিকা
-
জাতীয় রিজার্ভ বৃদ্ধি করে
-
গ্রামীণ অর্থনীতিতে সমৃদ্ধি আনে
-
পরিবারগুলোর জীবনমান উন্নত করে
-
দারিদ্র্য হ্রাসে সহায়তা করে
রেমিট্যান্স পাঠানোর সঠিক ও নিরাপদ উপায়
-
ডিজিটাল চ্যানেল (আমি প্রবাসী অ্যাপ, TapTap Send, Remitly)
অবৈধ চ্যানেল (হুন্ডি) পরিহার করার গুরুত্ব
হুন্ডি বা অবৈধ পথে অর্থ পাঠানো আইনত অপরাধ এবং এতে টাকা হারানোর ঝুঁকি বেশি।
সরকার এখন হুন্ডি প্রতিরোধে কঠোর পদক্ষেপ নিচ্ছে।
প্রবাসী আয়ের বিনিয়োগে সরকারের উদ্যোগ
সরকার প্রবাসী আয়কে বিনিয়োগে রূপান্তরের জন্য চালু করেছে:
-
Bond Scheme for NRBs
-
Probashi Deposit Scheme
-
Probashi Investment Zone
অ্যাপ ও অনলাইন সেবার ভূমিকা
“আমি প্রবাসী” অ্যাপ এখন প্রবাসীদের ওয়ান-স্টপ সার্ভিস সেন্টার।
এই অ্যাপের মাধ্যমে আপনি পারবেন—
-
অনলাইনে রেজিস্ট্রেশন ও ট্রেনিং বুকিং
-
PDO সার্টিফিকেট দেখা
-
রেমিট্যান্স ট্র্যাক করা
-
সরকারি হেল্পলাইন ব্যবহার
“আমি প্রবাসী” হলো বাংলাদেশের প্রবাসী শ্রমিকদের জন্য এক নতুন যুগের সূচনা।
এই ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম শুধু প্রশিক্ষণ নয়, বরং নিরাপদ বিদেশযাত্রা, বৈধ রেমিট্যান্স ও প্রবাসী সেবাকে সহজ করেছে।
যারা বিদেশে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন, তাঁদের জন্য এই সেবা একটি বিশ্বস্ত পথপ্রদর্শক।
৫টি সাধারণ প্রশ্নোত্তর (FAQs)
১. আমি প্রবাসী ট্রেনিং সার্টিফিকেট কীভাবে পাবো?
👉 অনলাইনে amiprobashi.com এ আবেদন করে প্রশিক্ষণ সম্পন্ন করতে হবে।
২. PDO সার্টিফিকেট কি বাধ্যতামূলক?
👉 হ্যাঁ, বিদেশগামী প্রতিটি শ্রমিকের জন্য এটি আবশ্যক।
৩. PDO কোর্সে কী শেখানো হয়?
👉 বিদেশি সংস্কৃতি, আইন, নিরাপত্তা ও রেমিট্যান্স পাঠানোর নিয়ম শেখানো হয়।
৪. প্রবাসী প্রেরিত অর্থ পাঠানোর সবচেয়ে নিরাপদ উপায় কী?
👉 সরকারি ব্যাংক বা অনুমোদিত মানি ট্রান্সফার সার্ভিস।
৫. আমি প্রবাসী অ্যাপ দিয়ে কী করা যায়?
👉 রেজিস্ট্রেশন, ট্রেনিং বুকিং, PDO সার্টিফিকেট দেখা এবং রেমিট্যান্স ট্র্যাক করা যায়।







