০৮:০৭ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৬ জুন ২০২৫
কুরআন-হাদীসের আরবি দলিলসহ বিস্তারিত বর্ণনা

কুরবানীর পশুর কি কি খাওয়া হারাম ?

Mahmud abdullah
  • আপডেট সময়ঃ ১১:৫২:৪২ অপরাহ্ন, শনিবার, ৩১ মে ২০২৫
  • / ১১ বার পড়া হয়েছে।

কার উপর কুরবানী ওয়াজিব এবং কেমন পশু কুরবানীর জন্য কুরবানীর পশুর কি কি খাওয়া হারামউত্তম কে কুরবানী না করেও সাওয়াব পাবে?

কুরবানী ঈদ মুসলিম সমাজে একটি গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত। এটি ইবাদত আল্লাহর কাছে গ্রহণযোগ্য হওয়ার জন্য পশুর নির্বাচন থেকে শুরু করে তার স্বাস্থ্য ও খাবারের বিষয়টি বিশেষ গুরুত্ব বহন করে। পশুর খাওয়া ও খাওয়ানোর বিষয়টি ইসলামে সুস্পষ্ট নির্দেশিত। আজ আমরা আলোচনা করবো কুরবানীর পশুর জন্য কোন কোন খাদ্য হারাম এবং এর পেছনে কী-কী আল্লাহ ও রাসুলের হাদিসে নির্দেশনা রয়েছে।

১. পশুর খাবারে হারাম কী কী?

কুরবানীর পশুর জন্য যে খাদ্য হারাম বিবেচিত, তা মূলতঃ:

  • মৃত্তিকা, ময়লা, বা ময়লা মাটি: পশু যদি এমন ময়লা বা ক্ষতিকর পদার্থ খায়, যা স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর, তাহলে তা হারাম।

  • নিষিদ্ধ পশুর মাংস বা উপাদান: যেমন শুয়োরের মাংস বা তার কোনো অংশ।

  • পশুর জন্য বিষাক্ত বা ক্ষতিকর খাদ্য: কোন বিষাক্ত বা রাসায়নিক জাতীয় খাদ্য খাওয়া।

  • মদ বা অন্য কোনো নেশাজাতীয় দ্রব্য: পশুর খাদ্যতালিকায় মদ বা নেশাজাতীয় দ্রব্য দেয়া হারাম।

২. কুরআন-হাদিসে পশুর খাদ্যের উল্লেখ

আল্লাহ তায়ালা বলেন:
وَكُلُوا مِمَّا رَزَقَكُمُ اللَّهُ حَلَالًا طَيِّبًا ۚ وَاتَّقُوا اللَّهَ الَّذِي أَنتُم بِهِ مُؤْمِنُونَ
(সূরা মায়েদা: ৪)
অর্থাৎ: “আর খাও যে কোন হালাল এবং পরিপাটি যা আল্লাহ তোমাদের رزق (রিজিক) দিয়েছেন এবং আল্লাহকে ভীতিভয়ে ভয় কর যিনি তোমরা ঈমানদার।”

রাসূল ﷺ বলেছেন:
“إِنَّ اللَّهَ طَيِّبٌ لا يَقْبَلُ إِلَّا طَيِّبًا”
(বুখারী ও মুসলিম)
অর্থাৎ: “আল্লাহ পরিপাটি ও পবিত্র, তিনি শুধুমাত্র পরিপাটি ও পবিত্র জিনিস গ্রহণ করেন।”

এখন প্রশ্ন হল, পশুর জন্য কী কী খাদ্য হারাম, যা পশুর শরীরে ক্ষতিকর এবং কুরবানীর জন্য নিষিদ্ধ?

৩. পশুর জন্য হারাম খাদ্যের বৈজ্ঞানিক ও শারীরিক প্রভাব

পশুর শরীরের স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর খাদ্য যেমন বিষাক্ত পাতা, রাসায়নিক জাতীয় খাদ্য বা আবর্জনা খেলে, পশুর শরীর দুর্বল হয় এবং এর মাংস খাওয়ার পরিণতিও সঠিক হয় না। ইসলামী শরীয়তে পশুর মাংস সুস্থ, শক্তিশালী এবং প্রাণবন্ত পশুর হতে হবে।

৪. হারাম খাদ্য খাওয়ানো কেন কুরবানীর পশুর জন্য ক্ষতিকর?

  • পশুর শরীরে রোগব্যাধি ও বিষক্রিয়া তৈরি হয়।

  • পশুর শরীর দুর্বল হয়ে যায়।

  • পশুর মাংস খাওয়া মানুষে ক্ষতি করতে পারে।

  • কুরবানী পশুর যথার্থ ইবাদত পূরণ হয় না।

৫. পশুর খাবারে নিষিদ্ধ উপাদান সম্পর্কে প্রাসঙ্গিক হাদিস

রাসূল ﷺ বলেছেন:
“مَا أَكَلَ شَيْءٌ طَعَامَ أَحَدِكُمْ قَبْلَ أَنْ يُذْبَحَ، فَإِنَّهُ لَوْ أُعْطِيَ ذَبِيحَتَهُ لَشَمَّ رِجْلَهُ”
(তিরমিযী)
অর্থাৎ: “তোমাদের কেউ যেন নিজের পশুর মাংস খায় না, যতক্ষণ না তা যথাযথ ভাবে জবাই করা হয়।”

৬. পশুর খাদ্যের জন্য ইসলামিক দিক নির্দেশনা

  • পশুর খাদ্য হালাল ও স্বাস্থ্যসম্মত হতে হবে।

  • পশুর খাদ্যে বিষাক্ত, অশুচি, বা নিষিদ্ধ জিনিস দেওয়া যাবে না।

  • পশুকে ভালো খাবার ও পানি দিতে হবে যাতে সে সুস্থ থাকে।

  • পশুর জন্য আল্লাহর নিয়ম-নীতি মেনে চলা আবশ্যক।

৭.কুরবানীর পশুর খাদ্য একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় যা ইসলামী শরীয়তে স্পষ্টভাবে নিয়ন্ত্রিত। পশুকে হালাল, পরিষ্কার ও স্বাস্থ্যসম্মত খাদ্য দেয়া আবশ্যক, যা পশুর সুস্থতা ও কুরবানীর ইবাদত সম্পূর্ণ করতে সাহায্য করে। কুরআন ও হাদিসের নির্দেশনা অনুযায়ী পশুর জন্য নিষিদ্ধ খাদ্য এড়ানো মুসলিম হিসেবে আমাদের দায়িত্ব।

নিউজটি শেয়ার করুন

বিস্তারিত লিখুনঃ

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষণ করুন

কুরআন-হাদীসের আরবি দলিলসহ বিস্তারিত বর্ণনা

কুরবানীর পশুর কি কি খাওয়া হারাম ?

আপডেট সময়ঃ ১১:৫২:৪২ অপরাহ্ন, শনিবার, ৩১ মে ২০২৫

কুরবানী ঈদ মুসলিম সমাজে একটি গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত। এটি ইবাদত আল্লাহর কাছে গ্রহণযোগ্য হওয়ার জন্য পশুর নির্বাচন থেকে শুরু করে তার স্বাস্থ্য ও খাবারের বিষয়টি বিশেষ গুরুত্ব বহন করে। পশুর খাওয়া ও খাওয়ানোর বিষয়টি ইসলামে সুস্পষ্ট নির্দেশিত। আজ আমরা আলোচনা করবো কুরবানীর পশুর জন্য কোন কোন খাদ্য হারাম এবং এর পেছনে কী-কী আল্লাহ ও রাসুলের হাদিসে নির্দেশনা রয়েছে।

১. পশুর খাবারে হারাম কী কী?

কুরবানীর পশুর জন্য যে খাদ্য হারাম বিবেচিত, তা মূলতঃ:

  • মৃত্তিকা, ময়লা, বা ময়লা মাটি: পশু যদি এমন ময়লা বা ক্ষতিকর পদার্থ খায়, যা স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর, তাহলে তা হারাম।

  • নিষিদ্ধ পশুর মাংস বা উপাদান: যেমন শুয়োরের মাংস বা তার কোনো অংশ।

  • পশুর জন্য বিষাক্ত বা ক্ষতিকর খাদ্য: কোন বিষাক্ত বা রাসায়নিক জাতীয় খাদ্য খাওয়া।

  • মদ বা অন্য কোনো নেশাজাতীয় দ্রব্য: পশুর খাদ্যতালিকায় মদ বা নেশাজাতীয় দ্রব্য দেয়া হারাম।

২. কুরআন-হাদিসে পশুর খাদ্যের উল্লেখ

আল্লাহ তায়ালা বলেন:
وَكُلُوا مِمَّا رَزَقَكُمُ اللَّهُ حَلَالًا طَيِّبًا ۚ وَاتَّقُوا اللَّهَ الَّذِي أَنتُم بِهِ مُؤْمِنُونَ
(সূরা মায়েদা: ৪)
অর্থাৎ: “আর খাও যে কোন হালাল এবং পরিপাটি যা আল্লাহ তোমাদের رزق (রিজিক) দিয়েছেন এবং আল্লাহকে ভীতিভয়ে ভয় কর যিনি তোমরা ঈমানদার।”

রাসূল ﷺ বলেছেন:
“إِنَّ اللَّهَ طَيِّبٌ لا يَقْبَلُ إِلَّا طَيِّبًا”
(বুখারী ও মুসলিম)
অর্থাৎ: “আল্লাহ পরিপাটি ও পবিত্র, তিনি শুধুমাত্র পরিপাটি ও পবিত্র জিনিস গ্রহণ করেন।”

এখন প্রশ্ন হল, পশুর জন্য কী কী খাদ্য হারাম, যা পশুর শরীরে ক্ষতিকর এবং কুরবানীর জন্য নিষিদ্ধ?

৩. পশুর জন্য হারাম খাদ্যের বৈজ্ঞানিক ও শারীরিক প্রভাব

পশুর শরীরের স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর খাদ্য যেমন বিষাক্ত পাতা, রাসায়নিক জাতীয় খাদ্য বা আবর্জনা খেলে, পশুর শরীর দুর্বল হয় এবং এর মাংস খাওয়ার পরিণতিও সঠিক হয় না। ইসলামী শরীয়তে পশুর মাংস সুস্থ, শক্তিশালী এবং প্রাণবন্ত পশুর হতে হবে।

৪. হারাম খাদ্য খাওয়ানো কেন কুরবানীর পশুর জন্য ক্ষতিকর?

  • পশুর শরীরে রোগব্যাধি ও বিষক্রিয়া তৈরি হয়।

  • পশুর শরীর দুর্বল হয়ে যায়।

  • পশুর মাংস খাওয়া মানুষে ক্ষতি করতে পারে।

  • কুরবানী পশুর যথার্থ ইবাদত পূরণ হয় না।

৫. পশুর খাবারে নিষিদ্ধ উপাদান সম্পর্কে প্রাসঙ্গিক হাদিস

রাসূল ﷺ বলেছেন:
“مَا أَكَلَ شَيْءٌ طَعَامَ أَحَدِكُمْ قَبْلَ أَنْ يُذْبَحَ، فَإِنَّهُ لَوْ أُعْطِيَ ذَبِيحَتَهُ لَشَمَّ رِجْلَهُ”
(তিরমিযী)
অর্থাৎ: “তোমাদের কেউ যেন নিজের পশুর মাংস খায় না, যতক্ষণ না তা যথাযথ ভাবে জবাই করা হয়।”

৬. পশুর খাদ্যের জন্য ইসলামিক দিক নির্দেশনা

  • পশুর খাদ্য হালাল ও স্বাস্থ্যসম্মত হতে হবে।

  • পশুর খাদ্যে বিষাক্ত, অশুচি, বা নিষিদ্ধ জিনিস দেওয়া যাবে না।

  • পশুকে ভালো খাবার ও পানি দিতে হবে যাতে সে সুস্থ থাকে।

  • পশুর জন্য আল্লাহর নিয়ম-নীতি মেনে চলা আবশ্যক।

৭.কুরবানীর পশুর খাদ্য একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় যা ইসলামী শরীয়তে স্পষ্টভাবে নিয়ন্ত্রিত। পশুকে হালাল, পরিষ্কার ও স্বাস্থ্যসম্মত খাদ্য দেয়া আবশ্যক, যা পশুর সুস্থতা ও কুরবানীর ইবাদত সম্পূর্ণ করতে সাহায্য করে। কুরআন ও হাদিসের নির্দেশনা অনুযায়ী পশুর জন্য নিষিদ্ধ খাদ্য এড়ানো মুসলিম হিসেবে আমাদের দায়িত্ব।