কুরআন-হাদীসের আরবি দলিলসহ ৫০টি বহুল আলোচিত প্রশ্নোত্তর
তাওবাহ করার সহীহ পদ্ধতি, ফজিলত, গুরুত্ব, দোআ ও আমল — কুরআন-হাদীসের বর্ণনা

- আপডেট সময়ঃ ১১:২০:৫৫ অপরাহ্ন, শনিবার, ৩১ মে ২০২৫
- / ৩৮ বার পড়া হয়েছে।
তাওবাহ বা তাওবা মানে হলো আন্তরিকভাবে আল্লাহর নিকট নিজের গোনাহের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করা এবং ভবিষ্যতে সেই গোনাহ না করার দৃঢ় অঙ্গীকার করা।
এটি একজন মুসলমানের আত্মশুদ্ধি ও সফলতার প্রথম ধাপ। নিচে কুরআন ও সহীহ হাদীসের আলোকে তাওবাহ সম্পর্কে ধারাবাহিক উপস্থাপন করা হলো:
“তাওবাহ” শব্দের আভিধানিক অর্থ: ফিরে আসা বা প্রত্যাবর্তন করা। শরিয়তের পরিভাষায়, তাওবাহ হল আল্লাহর অবাধ্যতা থেকে ফিরে আসা এবং আনুগত্যের পথে ফিরে আসা।
তাওবাহর গুরুত্ব ও মর্যাদা
আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা’আলা বলেন:
﴿إِنَّ اللَّهَ يُحِبُّ التَّوَّابِينَ وَيُحِبُّ الْمُتَطَهِّرِينَ﴾
“নিশ্চয়ই আল্লাহ তওবাকারীদের ভালোবাসেন এবং যারা পবিত্রতা অর্জন করে তাদেরও ভালোবাসেন।”
— [সূরা আল-বাকারা: ২২২]
তাওবাহ ফরজ কেন?
তাওবাহ করা সব মুসলমানের ওপর ফরজ। যারা গোনাহ করেছে তাদের জন্য এই ফরজ কঠিন হলেও, এটি ইসলামী জীবনের পুনর্জন্ম।
﴿وَتُوبُوا إِلَى اللَّهِ جَمِيعًا أَيُّهَا الْمُؤْمِنُونَ لَعَلَّكُمْ تُفْلِحُونَ﴾
“হে মুমিনগণ! তোমরা সকলে আল্লাহর দিকে তাওবাহ করো, যাতে তোমরা সফল হও।”
— [সূরা নূর: ৩১]
তাওবাহর সহীহ পদ্ধতি
তাওবাহের সহীহ পদ্ধতি কুরআন ও হাদীস দ্বারা নির্ধারিত:
১. গোনাহ স্বীকার করা
নিজ গোনাহ স্বীকার করে আন্তরিকভাবে অনুতপ্ত হতে হবে।
২. গোনাহ ত্যাগ করা
বর্তমান ও ভবিষ্যতে সে গোনাহ পুনরায় না করার দৃঢ় সংকল্প রাখতে হবে।
৩. আন্তরিক অনুতাপ
হৃদয়ের গভীর থেকে অনুতপ্ত হতে হবে এবং আল্লাহর দরবারে কান্নাকাটি করতে হবে।
৪. ক্ষতিপূরণ করা (যদি অন্যের হক থাকে)
কারো হক নষ্ট করলে তা ফিরিয়ে দিতে হবে বা তার কাছে ক্ষমা চাইতে হবে।
রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এর তাওবাহর আমল
নবী করিম (ﷺ) ইরশাদ করেছেন:
«إني لأتوب إلى الله في اليوم أكثر من سبعين مرة»
“আমি প্রতিদিন আল্লাহর কাছে সত্তর বার (বা তার বেশি) তাওবাহ করি।”
— [সহীহ বুখারী: ৫৯৪৮]
তাওবাহ কবুল হওয়ার শর্ত
১. গোনাহ ত্যাগ
২. অনুতাপ
৩. ভবিষ্যতে না করার অঙ্গীকার
৪. যদি কারো হক হয়, হক ফিরিয়ে দেওয়া
তাওবাহ বিলম্বিত করার ক্ষতি
তাওবাহ করতে দেরি করা মানে হলো শয়তানের ফাঁদে পড়া। মৃত্যু আসার আগে তাওবাহ করতে না পারলে দুনিয়া ও আখিরাত উভয়ে ক্ষতি হয়।
﴿وَلَيْسَتِ التَّوْبَةُ لِلَّذِينَ يَعْمَلُونَ السَّيِّئَاتِ حَتَّىٰ إِذَا حَضَرَ أَحَدَهُمُ الْمَوْتُ﴾
“তাদের তাওবাহ কবুল হয় না, যারা মৃত্যুর মুখোমুখি হয়ে তাওবাহ করে।”
— [সূরা নিসা: ১৮]
তাওবাহের ফজিলত
১. গোনাহ মাফ হয়
২. জান্নাতের ওয়াদা
৩. হৃদয়ে প্রশান্তি
৪. রিজিকের বরকত
৫. দোয়া কবুল হওয়া
তাওবাহ করলে গোনাহ কীভাবে মাফ হয়?
আল্লাহ বলেন:
﴿إِلَّا مَن تَابَ وَآمَنَ وَعَمِلَ عَمَلًا صَالِحًا فَأُوْلَئِكَ يُبَدِّلُ اللَّهُ سَيِّئَاتِهِمْ حَسَنَاتٍ﴾
“যে তাওবাহ করে, ঈমান আনে ও সৎকর্ম করে, আল্লাহ তার গোনাহসমূহকে নেকীতে পরিণত করে দেন।”
— [সূরা আল-ফুরকান: ৭০]
তাওবাহর উপযুক্ত সময়
তাওবাহর কোনো নির্দিষ্ট সময় নেই, তবে মৃত্যুর আগে এবং সূর্য পশ্চিম দিক থেকে ওঠার আগেই করতে হবে।
তাওবাহ করার পর কী করা উচিত?
-
নামাজে অধিক মনোযোগ
-
যিকির ও ইস্তিগফার
-
কুরআন তেলাওয়াত
-
ভালো সঙ্গ বেছে নেওয়া
-
গোনাহর পথ পরিহার করা
তাওবাহর পর সতর্কতা
১. আগের সঙ্গ ত্যাগ করা
২. একাকিত্বে গোনাহ না করা
৩. রিয়া বা আত্মপ্রশংসা না করা
তাওবাহর পর যে দোয়া পড়া উত্তম
سيد الاستغفار (সায়্যিদুল ইস্তিগফার):
اللَّهُمَّ أَنْتَ رَبِّي، لا إِلَهَ إِلَّا أَنْتَ، خَلَقْتَنِي وَأَنَا عَبْدُكَ، وَأَنَا عَلَى عَهْدِكَ وَوَعْدِكَ مَا اسْتَطَعْتُ، أَعُوذُ بِكَ مِنْ شَرِّ مَا صَنَعْتُ، أَبُوءُ لَكَ بِنِعْمَتِكَ عَلَيَّ، وَأَبُوءُ بِذَنْبِي، فَاغْفِرْ لِي، فَإِنَّهُ لا يَغْفِرُ الذُّنُوبَ إِلَّا أَنْتَ
অর্থ: হে আল্লাহ! আপনি আমার রব, আপনি ছাড়া কোনো উপাস্য নেই। আপনি আমাকে সৃষ্টি করেছেন, আমি আপনার বান্দা… আপনি ছাড়া কেউই গোনাহ মাফ করতে পারে না।
— [সহীহ বুখারী: ৬৩০৬]
তাওবাহকারী বান্দার মর্যাদা
রাসূল (ﷺ) বলেন:
«التَّائِبُ مِنَ الذَّنْبِ كَمَنْ لا ذَنْبَ لَهُ»
“যে গোনাহ করে তাওবাহ করেছে, সে এমন, যেন সে কোনো গোনাহই করেনি।”
— [ইবনু মাজাহ: ৪২৫০]
৫০টি বহুল আলোচিত প্রশ্নোত্তর
১. তাওবাহ কাকে বলে?
উত্তর: তাওবাহ অর্থ ফিরে আসা। ইসলামী পরিভাষায়, আল্লাহর অবাধ্যতা থেকে ফিরে তাঁর আনুগত্যে আত্মসমর্পণ করাকে তাওবাহ বলা হয়। (সূরা তাহরীম: ৮)
২. তাওবাহ করতে হলে কী করতে হবে?
উত্তর: তিনটি শর্ত:
১. গোনাহের অনুতাপ করা
২. সাথে সাথেই গোনাহ পরিত্যাগ করা
৩. ভবিষ্যতে আর না করার প্রতিজ্ঞা করা
আর যদি কারো হক নষ্ট করে থাকে তবে তা ফিরিয়ে দিতে হবে।
৩. আল্লাহ তাওবাহ কবুল করেন কি?
উত্তর: হ্যাঁ, তিনি খুবই ক্ষমাশীল।
আল-কুরআন: “إِنَّ اللَّهَ يُحِبُّ التَّوَّابِينَ” — নিশ্চয়ই আল্লাহ তাওবাকারীদের ভালোবাসেন। (সূরা বাকারা: ২২২)
৪. গোনাহ যত বড়ই হোক, তাওবাহ কবুল হবে কি?
উত্তর: অবশ্যই।
হাদীস: “যে তাওবাহ করে, সে এমন যেন গোনাহ করেনি।” (ইবনে মাজাহ)
৫. বারবার গোনাহ করলেও কি তাওবাহ করা যাবে?
উত্তর: যতবার গোনাহ হবে, ততবার তাওবাহ করতে হবে।
হাদীস: আল্লাহ বলেন, “আমার বান্দা গোনাহ করেছে, সে জানে তার একমাত্র রবই গোনাহ ক্ষমা করতে পারে। আমি তাকে ক্ষমা করলাম।” (মুসলিম)
৬. তাওবাহ কখন করতে হবে?
উত্তর: গোনাহ বুঝা মাত্রই তাওবাহ করা উচিত। দেরি না করে।
৭. মৃত্যুশয্যায় তাওবাহ করলে কি কবুল হয়?
উত্তর: না। যখন প্রাণ গলার কাছে চলে আসে তখন তাওবাহ গ্রহণযোগ্য নয়।
আল-কুরআন: “তাদের জন্য তাওবাহ নেই যারা মৃত্যুর সময় বলে ‘আমি এখন তাওবাহ করলাম।’” (সূরা নিসা: ১৮)
৮. তাওবাহ কি প্রত্যেক গোনাহের জন্য আবশ্যক?
উত্তর: হ্যাঁ, প্রত্যেক গোনাহের জন্য তাওবাহ করা আবশ্যক।
৯. তাওবাহ কি ইবাদত?
উত্তর: হ্যাঁ, এটি একটি বড় ইবাদত, যা আল্লাহ নিজেই ভালোবাসেন।
১০. তাওবাহ করলে কি পুরানো গোনাহ মাফ হয়ে যায়?
উত্তর: হ্যাঁ। এমনকি সে অতীত জীবনের সব গোনাহ আল্লাহ ক্ষমা করে দেন। (সূরা ফুরকান: ৭০)
১১. তাওবাহের কোনো নির্দিষ্ট দোয়া আছে কি?
উত্তর: হ্যাঁ, যেমন:
“رَبِّ اغْفِرْ لِي وَتُبْ عَلَيَّ، إِنَّكَ أَنْتَ التَّوَّابُ الرَّحِيمُ”
(হে আমার প্রভু! আমাকে ক্ষমা করো এবং আমার তাওবাহ কবুল করো। নিশ্চয়ই তুমি তাওবাহ কবুলকারী, পরম দয়ালু।)
১২. তাওবাহ করলে কি গোনাহগুলো নেকীতে পরিণত হয়?
উত্তর: হ্যাঁ, আল্লাহ চাইলে তা নেকীতে পরিণত করে দেন। (সূরা ফুরকান: ৭০)
১৩. কিভাবে বুঝবো আল্লাহ আমার তাওবাহ কবুল করেছেন?
উত্তর: অন্তরে প্রশান্তি আসা, গোনাহ থেকে দূরে থাকা এবং ইবাদতে আগ্রহ বৃদ্ধি পাওয়া — এগুলো কবুল হওয়ার আলামত।
১৪. যারা জানেন না তারা গোনাহ করছে, তাদেরও তাওবাহ করতে হবে কি?
উত্তর: হ্যাঁ, কারণ অজ্ঞতা গোনাহ থেকে রক্ষা করে না।
১৫. দিনের কোন সময় তাওবাহ করা উত্তম?
উত্তর: যেকোনো সময়, তবে শেষ রাত উত্তম। (তিরমিজি)
১৬. গোপনে গোনাহ করলে তাওবাহ গোপনে করতে হবে?
উত্তর: হ্যাঁ। তবে প্রকাশ্য গোনাহ হলে প্রকাশ্যে তাওবাহ করা উত্তম।
১৭. চোখের গোনাহ থেকেও কি তাওবাহ করতে হবে?
উত্তর: অবশ্যই। চোখের জিনা থেকেও তাওবাহ করতে হবে। (বুখারি)
১৮. হারাম সম্পদ থেকে উপার্জন করলে কীভাবে তাওবাহ করবো?
উত্তর: হারাম সম্পদ পরিত্যাগ করে তা হালাল উপায়ে ফিরিয়ে দিতে হবে এবং তাওবাহ করতে হবে।
১৯. বান্দার হক নষ্ট করলে কীভাবে তাওবাহ করবো?
উত্তর: তার হক ফিরিয়ে দিতে হবে এবং আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাইতে হবে।
২০. কিভাবে আল্লাহ বান্দার তাওবাহ কবুল করেন?
উত্তর: আল্লাহ বলেন, “আমি বান্দার প্রতি আরও বেশি খুশি হই যখন সে তাওবাহ করে।” (মুসলিম)
২১. তাওবাহ কি শুধু বড় গোনাহের জন্য?
উত্তর: না, ছোট-বড় সব গোনাহের জন্য তাওবাহ করতে হয়।
২২. তাওবাহ ছাড়া কি জান্নাতে যাওয়া সম্ভব?
উত্তর: যদি কেউ তাওবাহ না করে গোনাহে মগ্ন থাকে, আল্লাহ চাইলে ক্ষমা করতে পারেন, তবে তাওবাহ না করলে তা কঠিন।
২৩. সব সময় তাওবাহ করাই কি একরকম রিয়া বা অভিনয় নয়?
উত্তর: না, বরং তাওবাহ বারবার করাই ঈমানদারের পরিচয়। নবী করিম (ﷺ) প্রতিদিন ৭০ থেকে ১০০ বার তাওবাহ করতেন। (বুখারি)
২৪. কাউকে হত্যা করলে কি তাওবাহ কবুল হয়?
উত্তর: হ্যাঁ, যদি সে আন্তরিকভাবে অনুতপ্ত হয়ে তাওবাহ করে এবং ক্ষতিপূরণ দেয়।
২৫. আল্লাহ কেন এত বার ক্ষমা করেন?
উত্তর: কারণ তিনি রহমান ও রাহিম। তিনি চান বান্দা ফিরে আসুক এবং জাহান্নাম থেকে রক্ষা পাক। (সূরা আল-আনআম: ৫৪)
২৬. যদি কেউ মনে করে আল্লাহ তাকে ক্ষমা করবেন না?
উত্তর: এ ধারণা হারাম। এটি আল্লাহর রহমত থেকে নিরাশ হওয়া, যা কুফরের কাছাকাছি। (সূরা যুমার: ৫৩)
২৭. তাওবাহ করার পর যদি পুনরায় গোনাহ হয়ে যায়?
উত্তর: আবারও অনুতপ্ত হয়ে তাওবাহ করতে হবে। যতবার গোনাহ হবে, ততবার তাওবাহ করতে হবে।
২৮. নারীদের জন্য তাওবাহ করার আলাদা নিয়ম আছে কি?
উত্তর: না, নারী-পুরুষ সবার জন্য একই নিয়ম।
২৯. চোখের পানিতে কি গোনাহ মাফ হয়?
উত্তর: হ্যাঁ, যদি তা আল্লাহর ভয়ে আসে, তবে তা জাহান্নামের আগুন হারাম করে দেয়। (তিরমিজি)
৩০. কিভাবে আল্লাহর ভালোবাসা পাওয়া যায়?
উত্তর: তাওবাহ করে ফিরে আসলে আল্লাহ ভালোবাসেন। “আল্লাহ তাওবাকারীদের ভালোবাসেন।” (সূরা বাকারা: ২২২)
৩১. হালাল পথে উপার্জনের জন্য তাওবাহ কি সাহায্য করে?
উত্তর: হ্যাঁ, তাওবাহ করলে আল্লাহ বরকত দেন এবং হালাল রিজিকের দরজা খুলে দেন।
৩২. তাওবাহ করলে কি দোয়া কবুল হয়?
উত্তর: হ্যাঁ, তাওবাহ করার পর দোয়া কবুল হওয়ার সম্ভাবনা বাড়ে।
৩৩. কোন দোয়াটি তাওবাহর জন্য সবচেয়ে উত্তম?
উত্তর: “سيد الاستغفار” অর্থাৎ সায়্যিদুল ইস্তিগফার — যা সহীহ বুখারীতে বর্ণিত।
৩৪. তাওবাহ কি শুধুই মুখে বলতে হবে?
উত্তর: না, তা অন্তর থেকে অনুভব করতে হবে এবং জীবনে পরিবর্তন আনতে হবে।
৩৫. রমজানে তাওবাহ করলে কি আলাদা ফজিলত আছে?
উত্তর: হ্যাঁ, কারণ রমজান মাসে আল্লাহর রহমত ও মাগফিরাতের দরজা খোলা থাকে।
৩৬. যিনি নিয়মিত গোনাহ করেন, তার কি তাওবাহ কবুল হয়?
উত্তর: হ্যাঁ, যতবার তাওবাহ করবে, ততবার আল্লাহ ক্ষমা করতে প্রস্তুত।
৩৭. গোপনে গোনাহ করলে কাউকে বলতে হবে কি?
উত্তর: না, বরং একান্তে আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাইতে হবে।
৩৮. শিশুদের জন্য তাওবাহ দরকার কি?
উত্তর: না, বালেগ হওয়ার পূর্বে তাদের উপর গোনাহ লেখা হয় না।
৩৯. পরিবারের সকলের জন্য কি তাওবাহ করা যায়?
উত্তর: আপনি তাদের জন্য দোয়া করতে পারেন, কিন্তু প্রত্যেকের নিজ নিজ তাওবাহ করতে হবে।
৪০. কোনো বড় গোনাহের পর হজ করলে কি ক্ষমা হয়?
উত্তর: হ্যাঁ, যদি হজ সহীহভাবে সম্পন্ন হয়, তবে সব পুরনো গোনাহ মাফ হয়ে যায়। (বুখারি)
৪১. তাওবাহ ছাড়া হজ করলে কি গোনাহ মাফ হবে না?
উত্তর: তাওবাহ না করলে আন্তরিকতা থাকবে না, তাই হজের পুর্নতা আসবে না।
৪২. তাওবাহ করতে দেরি করলে কি সমস্যা হয়?
উত্তর: মৃত্যু যে কখন আসবে কেউ জানে না। তাই দেরি না করে এখনই তাওবাহ করা উচিত।
৪৩. ইচ্ছাকৃত গোনাহের জন্য কি তাওবাহ কঠিন?
উত্তর: না, আল্লাহ সব গোনাহ ক্ষমা করতে সক্ষম।
৪৪. তাওবাহ করার পরে কি বন্ধু-বান্ধব থেকে দূরে থাকতে হবে?
উত্তর: যদি তারা আপনাকে গোনাহের দিকে টানে, তবে অবশ্যই দূরে থাকতে হবে।
৪৫. নামাজ না পড়ার জন্য তাওবাহ করলে কি আল্লাহ ক্ষমা করবেন?
উত্তর: হ্যাঁ, তবে এখন থেকেই নামাজ শুরু করতে হবে।
৪৬. তাওবাহ করলে কি নতুন জীবন শুরু হয়?
উত্তর: হ্যাঁ, একপ্রকার পুনর্জন্ম হয় আত্মার।
৪৭. কারো প্রতি অন্যায় করলে কিভাবে তাওবাহ করবো?
উত্তর: তার কাছে ক্ষমা চাইতে হবে এবং ক্ষতিপূরণ দিতে হবে।
৪৮. মুসলমান না থাকলেও কি তাওবাহ কবুল হবে?
উত্তর: হ্যাঁ, ইসলাম গ্রহণ করলে পূর্বের সব গোনাহ মাফ হয়ে যায়। (মুসলিম)
৪৯. বার্ধক্যে এসে তাওবাহ করলে কি আল্লাহ কবুল করেন?
উত্তর: হ্যাঁ, যতক্ষণ প্রাণ বের হয়নি, ততক্ষণ তাওবাহর দরজা খোলা।
৫০. তাওবাহর মাধ্যমে কি আল্লাহর নৈকট্য পাওয়া যায়?
উত্তর: অবশ্যই। আল্লাহ বলেন, “তোমরা তাওবাহ করো, যাতে তোমরা সফল হও।” (সূরা নূর: ৩১)
তাওবাহ শুধু একটি ইসলামী আমল নয়, বরং একটি নতুন জীবন শুরু করার ঘোষণা। আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা’আলা তাঁর বান্দাদের জন্য তাওবাহর দরজা সর্বদা খোলা রেখেছেন।
আমাদের কর্তব্য হলো গোনাহ বুঝে, অনুতপ্ত হয়ে, আন্তরিকভাবে আল্লাহর দিকে ফিরে যাওয়া।
আল্লাহ আমাদের সবাইকে সত্যিকার অর্থে আন্তরিকভাবে তাওবাহ করে জীবনে পরিবর্তন আনার তাওফিক দিন।