০৯:৫০ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২১ অগাস্ট ২০২৫
মাজহাব কী, কেন ও কার? ইসলামে মাজহাবের প্রয়োজনীয়তা

মাজহাব কী,কেন ও কার? ইসলামে মাজহাবের প্রয়োজনীয়তা কেমন ??

Rashed Alam
  • আপডেট সময়ঃ ০৩:৪৪:৩৯ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৪ মে ২০২৫
  • / ৪৬ বার পড়া হয়েছে।

হজের গুরুত্বপূর্ণ

মাজহাব কী,কেন ও কার?

“মাজহাব” শব্দটি আমাদের পরিচিত হলেও অনেকের মধ্যেই এটি নিয়ে রয়েছে বিভ্রান্তি। কেউ মনে করেন, মাজহাব ইসলামকে বিভক্ত করেছে; আবার কেউ মনে করেন, মাজহাব না মানলে সঠিক ইসলাম পালনই সম্ভব নয়। কিন্তু বাস্তবতা হলো, মাজহাব এক ঐশী রহমত—যা ইসলামের গভীরতা ও প্রযোজ্যতাকে সুগঠিত করেছে।”মাজহাব” (مذهب) শব্দটি আরবি “ذهب” ধাতু থেকে এসেছে যার অর্থ হলো “যাওয়া” বা “চলা”। এর শাব্দিক অর্থ—”পথ” বা “অবলম্বিত মতবাদ”। ইসলামী পরিভাষায় মাজহাব বলতে বোঝায় কোরআন ও সুন্নাহর ভিত্তিতে কোনো ইমামের গবেষণালব্ধ ফিকহি মত বা পদ্ধতি।


মাজহাবের ইতিহাস ও উত্পত্তি

মাজহাবের শুরুর ইতিহাস খুঁজলে আমরা পাই সাহাবাগণের যুগে—যেখানে একই মাসআলায় ভিন্ন ভিন্ন মত প্রকাশ পেত। পরে তাবেঈন ও তাবে তাবেঈনের যুগে ইলমুল ফিকহকে একটি সংগঠিত ও যৌক্তিক পদ্ধতিতে গড়ে তোলা হয়। এর ফলে উদ্ভব ঘটে চারটি প্রধান মাজহাবের:

  1. ইমাম আবু হানিফা (রহঃ) – হানাফি মাজহাব
  2. ইমাম মালিক (রহঃ) – মালিকি মাজহাব
  3. ইমাম আশ-শাফিঈ (রহঃ) – শাফেয়ি মাজহাব
  4. ইমাম আহমদ ইবনে হাম্বল (রহঃ) – হাম্বলি মাজহাব

কেন মাজহাব গঠিত হলো?

১. ভাষাগত ও চিন্তাগত ব্যাখ্যার তারতম্য

আল-কুরআন ও হাদীসের ভাষা আরবী হলেও, তার ব্যাখ্যায় ভিন্নতা আসা স্বাভাবিক। উদাহরণস্বরূপ, “لام” (লা) শব্দটি কখনও বাধ্যতামূলক নির্দেশ দেয়, কখনও নিছক সুপারিশ।

২. হাদীসের জ্ঞানগত সীমাবদ্ধতা

সব ইমাম একসাথে সব হাদীস জানতেন না। কেউ কারও কাছে কোনো হাদীস শুনেছেন, আবার কেউ তা শোনেননি। এ জন্য একই মাসআলায় মতভেদ দেখা গেছে।

৩. কিয়াস ও ইজতিহাদের ভিন্নতা

কোনো নির্দিষ্ট বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের স্পষ্ট নির্দেশ না থাকলে, ইজতিহাদ বা কিয়াস করা হয়। এক্ষেত্রে চিন্তাগত পার্থক্য মতভেদ সৃষ্টি করে।


ইসলামে মাজহাবের প্রয়োজনীয়তা

১. সাধারন মুসলিমদের জন্য গাইডলাইন

সব মুসলিমের জন্য প্রত্যেক মাসআলায় কুরআন-সুন্নাহ থেকে রায় বের করা সম্ভব নয়। তাই একজন ইমামের ফিকহি দিকনির্দেশনা অনুযায়ী চলাই সহজ ও নিরাপদ।

📚 ইমাম নওয়াবী বলেন:
“সাধারণ মানুষদের ইজতিহাদ করা ফরজ নয়। বরং তাদের দায়িত্ব হলো কোনো ইমামের অনুসরণ করা।” — (আল-মাজমূ’, খন্ড ১)

২. শরীয়াহর গভীর গবেষণা ও প্রক্রিয়াকরণ

ইসলামের প্রায় সব দিক—ইবাদাত, মুআমালাত, আখলাক, হুদুদ—এত জটিল যে তা সুচারুভাবে বুঝতে একজন বিশেষজ্ঞ ইমামের ফিকহ প্রয়োজন হয়।

৩. দলীলভিত্তিক মতপার্থক্যের সম্মান

মাজহাবভিত্তিক মতভেদ বিভেদ নয় বরং আল্লাহর রহমত। সাহাবা-তাবেইন যুগেও বহু মতভেদ ছিল, কিন্তু তা কখনো দুশমনির রূপ নেয়নি।

📖 দলীল:
“তোমার প্রভুর কাছ থেকে যদি চাইতো, তবে তারা সবাই এক দলে হয়ে যেত।” — (সূরা হূদ: ১১৮)


কোন মাজহাব সঠিক?

চারটি মাজহাবই কুরআন ও সহীহ হাদীসভিত্তিক। তাই কোনো একটি মাজহাব অন্যের থেকে ‘সর্বোত্তম’—এমন দাবি করা অনুচিত।

📚 ইমাম শাফিয়ি (রহঃ) বলেন:
“আমার মত সঠিক, কিন্তু তাতে ভুল থাকার সম্ভাবনা আছে; আর অন্যের মত ভুল, কিন্তু তাতে সঠিক হওয়ার সম্ভাবনাও আছে।”


মাজহাব মানা কি ফরজ?

মাজহাব মানা কোনো ফরজ নয়, কিন্তু প্রয়োজনীয়তা ও বাস্তবতা বিবেচনায় তা ওয়াজিবের কাছাকাছি।

📚 ইবনে তায়মিয়্যাহ (রহঃ) বলেন:
“যারা ইজতিহাদে অক্ষম, তাদের ইমামদের তাকলিদ করাই যুক্তিযুক্ত ও নিরাপদ।” — (মাজমূ’উল ফাতাওয়া)


মাজহাব না মানলে কী সমস্যা হয়?

১. ধর্মীয় বিশৃঙ্খলা

যদি সবাই নিজে নিজে কুরআন-হাদীস থেকে ফতোয়া দিতে শুরু করে, তাহলে সমাজে মতভেদ ও বিদআত বেড়ে যাবে।

২. বিদ্বেষ ও দলাদলি

চার মাজহাবকে অস্বীকার করে ‘মাজহাব-মুক্ত ইসলাম’ চালু করার চেষ্টা মূলত উম্মাহকে বিভক্ত করার একটি পথ।

📚 ইমাম মালিক (রহঃ) বলেন:
“এই উম্মতের শেষ অংশ প্রথমদের পথে না চললে, তারা কখনও সঠিক পথ পাবে না।”


এক মাজহাব থেকে আরেক মাজহাবে যাওয়া কি জায়েয?

হ্যাঁ, যদি কেউ বুঝে-শুনে দলীলভিত্তিকভাবে মত পরিবর্তন করে, তাহলে অন্য মাজহাবে যাওয়া জায়েয। তবে ফতোয়া গ্রহণে চাতুর্যতা করা হারাম (হিলা বা ফতোয়া শপিং)।


মাজহাব ও ঐক্যের সম্পর্ক

যেখানে মাজহাবগুলো কোরআন-সুন্নাহর ব্যাখ্যাভিত্তিক, সেখানে সেগুলো ঐক্যের বিপরীত নয় বরং সহনশীলতার দৃষ্টান্ত।

📖 আল্লাহ বলেন:
“তোমরা সবাই আল্লাহর রজ্জু দৃঢ়ভাবে ধারণ করো এবং বিভক্ত হয়ো না।” — (সূরা আলে ইমরান: ১০৩)


উপসংহার

মাজহাব কোনো ধর্মীয় বিভাজন নয়, বরং এটি ইসলামের বিশালতা, গভীরতা ও প্রযোজ্যতার বহিঃপ্রকাশ। যারা প্রকৃত ইলম রাখেন, তারা জানেন — মাজহাব মানা মানেই কুরআন-সুন্নাহর বিপরীতে যাওয়া নয়, বরং তার সঠিক ব্যাখ্যা গ্রহণ করা। আমাদের কর্তব্য হচ্ছে, ইমামদের প্রতি সম্মান রেখে মাজহাবের আলোকে ইসলাম পালন করা এবং মাজহাবভিত্তিক মতভেদকে বিভেদ নয় বরং রহমত হিসেবে দেখা।


FAQs (প্রশ্নোত্তর):

১. মাজহাব না মানলে কি কেউ গোমরাহ হয়ে যায়?
না, কিন্তু গোমরাহির সম্ভাবনা অনেক বেড়ে যায়, কারণ সাধারণ মানুষের পক্ষে সঠিক ইজতিহাদ করা অসম্ভব।

২. চার মাজহাব ছাড়া অন্য মাজহাব কি বৈধ?
যদি তা দলীলভিত্তিক হয় এবং সালাফে সালেহীনের অনুসরণে হয়, তাহলে হানাফি-মালিকি-শাফেয়ি-হাম্বলি ছাড়া অন্য মত গ্রহণের সুযোগ আছে; তবে গ্রহণযোগ্যতা সীমিত।

৩. মাজহাব নিয়ে বিতর্ক কীভাবে এড়ানো যায়?
শ্রদ্ধাশীল, সংযত এবং দলীলভিত্তিক আলোচনা করতে হবে; কাউকে ‘ভুল’ বলার আগে তার দলীল বোঝা জরুরি।

৪. একজন সাধারণ মুসলিমের জন্য কি এক মাজহাবেই থাকা জরুরি?
হ্যাঁ, তা উত্তম। কারণ এতে সে ফিকহি বিশৃঙ্খলা ও দ্বিধা থেকে বাঁচতে পারে।

৫. মাজহাব মানা কি কুরআনের বিরুদ্ধাচরণ?
না, বরং মাজহাব হলো কুরআন-সুন্নাহর ব্যাখ্যাভিত্তিক অনুশীলন।

নিউজটি শেয়ার করুন

বিস্তারিত লিখুনঃ

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষণ করুন

মাজহাব কী, কেন ও কার? ইসলামে মাজহাবের প্রয়োজনীয়তা

মাজহাব কী,কেন ও কার? ইসলামে মাজহাবের প্রয়োজনীয়তা কেমন ??

আপডেট সময়ঃ ০৩:৪৪:৩৯ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৪ মে ২০২৫

মাজহাব কী,কেন ও কার?

“মাজহাব” শব্দটি আমাদের পরিচিত হলেও অনেকের মধ্যেই এটি নিয়ে রয়েছে বিভ্রান্তি। কেউ মনে করেন, মাজহাব ইসলামকে বিভক্ত করেছে; আবার কেউ মনে করেন, মাজহাব না মানলে সঠিক ইসলাম পালনই সম্ভব নয়। কিন্তু বাস্তবতা হলো, মাজহাব এক ঐশী রহমত—যা ইসলামের গভীরতা ও প্রযোজ্যতাকে সুগঠিত করেছে।”মাজহাব” (مذهب) শব্দটি আরবি “ذهب” ধাতু থেকে এসেছে যার অর্থ হলো “যাওয়া” বা “চলা”। এর শাব্দিক অর্থ—”পথ” বা “অবলম্বিত মতবাদ”। ইসলামী পরিভাষায় মাজহাব বলতে বোঝায় কোরআন ও সুন্নাহর ভিত্তিতে কোনো ইমামের গবেষণালব্ধ ফিকহি মত বা পদ্ধতি।


মাজহাবের ইতিহাস ও উত্পত্তি

মাজহাবের শুরুর ইতিহাস খুঁজলে আমরা পাই সাহাবাগণের যুগে—যেখানে একই মাসআলায় ভিন্ন ভিন্ন মত প্রকাশ পেত। পরে তাবেঈন ও তাবে তাবেঈনের যুগে ইলমুল ফিকহকে একটি সংগঠিত ও যৌক্তিক পদ্ধতিতে গড়ে তোলা হয়। এর ফলে উদ্ভব ঘটে চারটি প্রধান মাজহাবের:

  1. ইমাম আবু হানিফা (রহঃ) – হানাফি মাজহাব
  2. ইমাম মালিক (রহঃ) – মালিকি মাজহাব
  3. ইমাম আশ-শাফিঈ (রহঃ) – শাফেয়ি মাজহাব
  4. ইমাম আহমদ ইবনে হাম্বল (রহঃ) – হাম্বলি মাজহাব

কেন মাজহাব গঠিত হলো?

১. ভাষাগত ও চিন্তাগত ব্যাখ্যার তারতম্য

আল-কুরআন ও হাদীসের ভাষা আরবী হলেও, তার ব্যাখ্যায় ভিন্নতা আসা স্বাভাবিক। উদাহরণস্বরূপ, “لام” (লা) শব্দটি কখনও বাধ্যতামূলক নির্দেশ দেয়, কখনও নিছক সুপারিশ।

২. হাদীসের জ্ঞানগত সীমাবদ্ধতা

সব ইমাম একসাথে সব হাদীস জানতেন না। কেউ কারও কাছে কোনো হাদীস শুনেছেন, আবার কেউ তা শোনেননি। এ জন্য একই মাসআলায় মতভেদ দেখা গেছে।

৩. কিয়াস ও ইজতিহাদের ভিন্নতা

কোনো নির্দিষ্ট বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের স্পষ্ট নির্দেশ না থাকলে, ইজতিহাদ বা কিয়াস করা হয়। এক্ষেত্রে চিন্তাগত পার্থক্য মতভেদ সৃষ্টি করে।


ইসলামে মাজহাবের প্রয়োজনীয়তা

১. সাধারন মুসলিমদের জন্য গাইডলাইন

সব মুসলিমের জন্য প্রত্যেক মাসআলায় কুরআন-সুন্নাহ থেকে রায় বের করা সম্ভব নয়। তাই একজন ইমামের ফিকহি দিকনির্দেশনা অনুযায়ী চলাই সহজ ও নিরাপদ।

📚 ইমাম নওয়াবী বলেন:
“সাধারণ মানুষদের ইজতিহাদ করা ফরজ নয়। বরং তাদের দায়িত্ব হলো কোনো ইমামের অনুসরণ করা।” — (আল-মাজমূ’, খন্ড ১)

২. শরীয়াহর গভীর গবেষণা ও প্রক্রিয়াকরণ

ইসলামের প্রায় সব দিক—ইবাদাত, মুআমালাত, আখলাক, হুদুদ—এত জটিল যে তা সুচারুভাবে বুঝতে একজন বিশেষজ্ঞ ইমামের ফিকহ প্রয়োজন হয়।

৩. দলীলভিত্তিক মতপার্থক্যের সম্মান

মাজহাবভিত্তিক মতভেদ বিভেদ নয় বরং আল্লাহর রহমত। সাহাবা-তাবেইন যুগেও বহু মতভেদ ছিল, কিন্তু তা কখনো দুশমনির রূপ নেয়নি।

📖 দলীল:
“তোমার প্রভুর কাছ থেকে যদি চাইতো, তবে তারা সবাই এক দলে হয়ে যেত।” — (সূরা হূদ: ১১৮)


কোন মাজহাব সঠিক?

চারটি মাজহাবই কুরআন ও সহীহ হাদীসভিত্তিক। তাই কোনো একটি মাজহাব অন্যের থেকে ‘সর্বোত্তম’—এমন দাবি করা অনুচিত।

📚 ইমাম শাফিয়ি (রহঃ) বলেন:
“আমার মত সঠিক, কিন্তু তাতে ভুল থাকার সম্ভাবনা আছে; আর অন্যের মত ভুল, কিন্তু তাতে সঠিক হওয়ার সম্ভাবনাও আছে।”


মাজহাব মানা কি ফরজ?

মাজহাব মানা কোনো ফরজ নয়, কিন্তু প্রয়োজনীয়তা ও বাস্তবতা বিবেচনায় তা ওয়াজিবের কাছাকাছি।

📚 ইবনে তায়মিয়্যাহ (রহঃ) বলেন:
“যারা ইজতিহাদে অক্ষম, তাদের ইমামদের তাকলিদ করাই যুক্তিযুক্ত ও নিরাপদ।” — (মাজমূ’উল ফাতাওয়া)


মাজহাব না মানলে কী সমস্যা হয়?

১. ধর্মীয় বিশৃঙ্খলা

যদি সবাই নিজে নিজে কুরআন-হাদীস থেকে ফতোয়া দিতে শুরু করে, তাহলে সমাজে মতভেদ ও বিদআত বেড়ে যাবে।

২. বিদ্বেষ ও দলাদলি

চার মাজহাবকে অস্বীকার করে ‘মাজহাব-মুক্ত ইসলাম’ চালু করার চেষ্টা মূলত উম্মাহকে বিভক্ত করার একটি পথ।

📚 ইমাম মালিক (রহঃ) বলেন:
“এই উম্মতের শেষ অংশ প্রথমদের পথে না চললে, তারা কখনও সঠিক পথ পাবে না।”


এক মাজহাব থেকে আরেক মাজহাবে যাওয়া কি জায়েয?

হ্যাঁ, যদি কেউ বুঝে-শুনে দলীলভিত্তিকভাবে মত পরিবর্তন করে, তাহলে অন্য মাজহাবে যাওয়া জায়েয। তবে ফতোয়া গ্রহণে চাতুর্যতা করা হারাম (হিলা বা ফতোয়া শপিং)।


মাজহাব ও ঐক্যের সম্পর্ক

যেখানে মাজহাবগুলো কোরআন-সুন্নাহর ব্যাখ্যাভিত্তিক, সেখানে সেগুলো ঐক্যের বিপরীত নয় বরং সহনশীলতার দৃষ্টান্ত।

📖 আল্লাহ বলেন:
“তোমরা সবাই আল্লাহর রজ্জু দৃঢ়ভাবে ধারণ করো এবং বিভক্ত হয়ো না।” — (সূরা আলে ইমরান: ১০৩)


উপসংহার

মাজহাব কোনো ধর্মীয় বিভাজন নয়, বরং এটি ইসলামের বিশালতা, গভীরতা ও প্রযোজ্যতার বহিঃপ্রকাশ। যারা প্রকৃত ইলম রাখেন, তারা জানেন — মাজহাব মানা মানেই কুরআন-সুন্নাহর বিপরীতে যাওয়া নয়, বরং তার সঠিক ব্যাখ্যা গ্রহণ করা। আমাদের কর্তব্য হচ্ছে, ইমামদের প্রতি সম্মান রেখে মাজহাবের আলোকে ইসলাম পালন করা এবং মাজহাবভিত্তিক মতভেদকে বিভেদ নয় বরং রহমত হিসেবে দেখা।


FAQs (প্রশ্নোত্তর):

১. মাজহাব না মানলে কি কেউ গোমরাহ হয়ে যায়?
না, কিন্তু গোমরাহির সম্ভাবনা অনেক বেড়ে যায়, কারণ সাধারণ মানুষের পক্ষে সঠিক ইজতিহাদ করা অসম্ভব।

২. চার মাজহাব ছাড়া অন্য মাজহাব কি বৈধ?
যদি তা দলীলভিত্তিক হয় এবং সালাফে সালেহীনের অনুসরণে হয়, তাহলে হানাফি-মালিকি-শাফেয়ি-হাম্বলি ছাড়া অন্য মত গ্রহণের সুযোগ আছে; তবে গ্রহণযোগ্যতা সীমিত।

৩. মাজহাব নিয়ে বিতর্ক কীভাবে এড়ানো যায়?
শ্রদ্ধাশীল, সংযত এবং দলীলভিত্তিক আলোচনা করতে হবে; কাউকে ‘ভুল’ বলার আগে তার দলীল বোঝা জরুরি।

৪. একজন সাধারণ মুসলিমের জন্য কি এক মাজহাবেই থাকা জরুরি?
হ্যাঁ, তা উত্তম। কারণ এতে সে ফিকহি বিশৃঙ্খলা ও দ্বিধা থেকে বাঁচতে পারে।

৫. মাজহাব মানা কি কুরআনের বিরুদ্ধাচরণ?
না, বরং মাজহাব হলো কুরআন-সুন্নাহর ব্যাখ্যাভিত্তিক অনুশীলন।