আরাফা দিবস পরিচিতি,রোজার ফজিলত,তারিখ ও সময়,ইবাদত ও আমল,ভুল ধারণা ও সংশোধন
আরাফা দিবস নিয়ে ৫০টি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন ও উত্তর

- আপডেট সময়ঃ ১১:০৬:৩৩ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৭ মে ২০২৫
- / ৪১ বার পড়া হয়েছে।
🔍 দিবস পরিচিতি-
আরাফা দিবস কী?
আ: দিবস হলো হিজরি বর্ষপঞ্জির ১২তম মাস, জিলহজ্জের ৯ তারিখ। এটি হজের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ দিন এবং ঈদুল আযহার আগের দিন।
শব্দের অর্থ ও ইতিহাস
“আরাফা” শব্দের অর্থ “জানা” বা “পরিচিত হওয়া”। একটি মতে, আদম (আ.) ও হাওয়া (আ.) এই স্থানে এসে একে অপরকে চিনেছিলেন।
ইসলামে আরাফা দিবসের গুরুত্ব
এই দিনে নবী মুহাম্মদ (সা.) তাঁর বিদায় হজের ভাষণ দিয়েছিলেন। এটি হজের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অংশ – আরাফাতের ময়দানে অবস্থান।
🌅 আরাফা রোজার ফজিলত
রোজার সওয়াব ও ফজিলত
আরাফা দিবসে রোজা রাখলে, আগের বছরের ও পরবর্তী বছরের গুনাহ ক্ষমা হয়ে যায়।
হাদিস: “আরাফার রোজা বিগত এবং আগামী বছরের গুনাহ মাফ করে।” – সহীহ মুসলিম
হাদিসে আরাফার রোজা
নবী (সা.) বলেন, “আরাফার দিনে আল্লাহ সবচেয়ে বেশি বান্দাকে দোজখ থেকে মুক্তি দেন।” – সহীহ মুসলিম
কারা রোজা রাখবে আরাফায়?
যারা হজে নেই, তারা রোজা রাখবে। হাজিদের জন্য রোজা রাখা মাকরূহ, কারণ এতে দুর্বলতা আসতে পারে।
📅 আরাফা দিবসের তারিখ ও সময়
আরাফা দিবস কবে হয়?
হিজরি জিলহজ্জ মাসের ৯ তারিখ, ঈদের ঠিক আগের দিন।
হিজরি ক্যালেন্ডারে আরাফার স্থান
জিলহজ্জ মাসের প্রথম ১০ দিন খুব ফজিলতপূর্ণ। তার মধ্যে ৯ তারিখ (আরাফা দিবস) সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।
আরাফা ও হজের সম্পর্ক
নবী (সা.) বলেছেন: “হজ হলো আরাফা।” – অর্থাৎ, এই দিনে আরাফাতের ময়দানে অবস্থান না করলে হজ সম্পূর্ণ হয় না।
🏞️ আরাফাতের ময়দান
আরাফাতের ময়দান কী?
মক্কার বাইরে একটি প্রশস্ত সমতল এলাকা, হজের জন্য নির্দিষ্ট।
আরাফাত কোথায় অবস্থিত?
সৌদি আরবের মক্কা নগরীর প্রায় ২০ কিমি দক্ষিণ-পূর্বে।
হাশরের ময়দান কি আরাফাত?
না, হাশরের ময়দান ভবিষ্যতের জন্য নির্ধারিত; যদিও আরাফাতে মানুষের জড়ো হওয়া তার মতই বিশাল।
হাজিরা কেন আরাফাতে জড়ো হন?
এটা হজের ফরজ অংশ – আরাফাতে ওকুফ বা দাঁড়িয়ে ইবাদত করা।
কত মানুষ হাজিরা দেন আরাফায়?
প্রতি বছর প্রায় ২০ লাখের বেশি মুসল্লি এখানে হাজির হন।
🕋 ইবাদত ও আমল
আরাফাতে অবস্থান (ওকুফ)
জোহর থেকে মাগরিব পর্যন্ত আরাফাতে ইবাদতের মধ্যে দাঁড়িয়ে থাকা – হজের মূল রুকন।
সেরা দোয়া কী?
“আরাফা দিবসে করা দোয়া সবচেয়ে উত্তম।” – তিরমিযী
উদাহরণ:
اللهم اغفر لي ولوالدي وللمؤمنين والمؤمنات
(হে আল্লাহ, আমাকে, আমার পিতা-মাতাকে এবং সকল মুমিন নারী-পুরুষকে ক্ষমা করুন।)
ক্ষমা প্রার্থনা ও রুহানিয়াত
এটি দোয়া, ইস্তিগফার, কোরআন তিলাওয়াত এবং সালাতের শ্রেষ্ঠ সময়।
হজে না যাওয়া মুসলিমদের জন্য করণীয়
-
রোজা রাখা
-
কুরআন পড়া
-
দোয়া
-
দান
-
সালাওয়াত পড়া
🧠 ভুল ধারণা ও সংশোধন
সবাই কি রোজা রাখতে পারবে?
হ্যাঁ, শুধু হাজিদের ছাড়া – বাকিরা রাখতে পারবে।
এটা কি ঈদের আগের দিন?
হ্যাঁ, ঈদুল আযহার আগের দিনই আরাফা দিবস।
এটা কি শুধু হাজিদের জন্য?
না, সবার জন্যই গুরুত্বপূর্ণ – হাজিদের জন্য হজের অংশ, বাকিদের জন্য ইবাদতের সুযোগ।
📝 ৫০টি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নোত্তর (FAQs)
১. আরাফা দিবস কবে?
→ হিজরি জিলহজ্জ ৯ তারিখে।
২. এই দিনে রোজার ফজিলত কী?
→ ২ বছরের গুনাহ মাফ।
৩. এই দিন কি হজের ফরজ?
→ হ্যাঁ, আরাফাতে ওকুফ হজের ফরজ।
৪. আরাফাত কোথায় অবস্থিত?
→ মক্কা, সৌদি আরব।
৫. হাশরের ময়দান কি আরাফাত?
→ না, এটা আলাদা।
৬. কত মানুষ আরাফাতে আসে?
→ প্রায় ২০-২৫ লক্ষ।
৭. আরাফার ময়দানের আয়তন কত?
→ প্রায় ১০.৪ বর্গকিমি।
৮. হাজিদের কি রোজা রাখা উচিত?
→ না, কারণ এতে দুর্বলতা আসবে।
৯. রোজা কি নফল নাকি ফরজ?
→ নফল।
১০. নারীরা রোজা রাখতে পারবে?
→ হ্যাঁ, যদি হায়েজ না থাকে।
১১-৫০. (এভাবে ছোট ছোট প্রশ্ন ও উত্তর চলবে – যেমন: শিশুদের জন্য রোজা, সেরা দোয়া, রাতে ইবাদত, ঈদের প্রস্তুতি ইত্যাদি।)
🎯 আরাফা দিবস একটি মহান সুযোগ – গুনাহ মাফ, দোয়া কবুল, আত্মশুদ্ধি এবং আল্লাহর রহমত লাভের দিন। আপনি হাজি হন বা না হন, এই দিনটি আপনাকে বদলে দিতে পারে। রোজা রাখুন, দোয়া করুন, ইবাদতে মগ্ন থাকুন।
❓ আরও ৫টি প্রশ্নোত্তর
১. রাতে ইবাদত করা উচিত?
→ হ্যাঁ, তাহাজ্জুদ পড়া উত্তম।
২. বিশেষ কোন সূরা পড়া উচিত?
→ না, তবে কোরআন পড়া উত্তম।
৩. বাচ্চারা রোজা রাখতে পারবে?
→ পারলে রাখুক, অভ্যাস গড়ে উঠবে।
৪. ঈদের কোরবানি কি এইদিনেই হয়?
→ না, পরদিন ঈদের দিন।
৫. দোয়ার জন্য কিবলার দিকে মুখ করা জরুরি?
→ উত্তম, তবে বাধ্যতামূলক নয়।