০২:৪০ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৫
ইসলামে স্বাস্থ্য সচেতনতার গুরুত্ব (তথ্যচিত্রধর্মী আলোচনা)

ইসলামে স্বাস্থ্য সচেতনতার গুরুত্ব (তথ্যচিত্রধর্মী আলোচনা)

Dr.Amanullah Kashem
  • আপডেট সময়ঃ ০২:২৭:২৪ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৫ মে ২০২৫
  • / ৬০ বার পড়া হয়েছে।

ইসলামে স্বাস্থ্য সচেতনতার গুরুত্ব (তথ্যচিত্রধর্মী আলোচনা)

ইসলাম একটি পূর্ণাঙ্গ জীবন ব্যবস্থা, যেখানে মানব জীবনের প্রতিটি দিকের দিকনির্দেশনা রয়েছে—

আধ্যাত্মিকতা থেকে শুরু করে দৈনন্দিন জীবনযাপন, এমনকি স্বাস্থ্যের বিষয়েও।

কোরআন ও হাদিসে স্বাস্থ্য রক্ষার গুরুত্ব অসংখ্যবার উল্লেখ করা হয়েছে, যা প্রমাণ করে ইসলাম শুধুই একটি ধর্ম নয়, বরং মানবতার জন্য একটি জীবনব্যবস্থা।


স্বাস্থ্য সংরক্ষণ: ইসলামের মৌলিক দৃষ্টিভঙ্গি

আল্লাহ তাআলা কোরআনে ইরশাদ করেন:وَكُلُوا وَاشْرَبُوا وَلَا تُسْرِفُوا ۚ إِنَّهُ لَا يُحِبُّ الْمُسْرِفِينَ”

“তোমরা খাও এবং পান কর, কিন্তু অপচয় করো না। নিশ্চয় তিনি অপচয়কারীদের পছন্দ করেন না।— [সূরা আল-আ’রাফ: ৩১]

এই আয়াত ইসলামের খাদ্যাভ্যাস ও স্বাস্থ্যরক্ষার মূলনীতির উপর আলোকপাত করে।

স্বাস্থ্য সচেতনতায় পরিমিত আহার, পরিশ্রম ও বিশ্রামের সঠিক ভারসাম্য অপরিহার্য, যা কোরআনের এই বাণীতে প্রতিফলিত।


রাসূলুল্লাহ ﷺ-এর স্বাস্থ্যবিষয়ক সুন্নাহ

হজরত মুহাম্মদ (সা.) ছিলেন এক অনন্য স্বাস্থ্য সচেতন ব্যক্তিত্ব। তিনি ব্যক্তিগত জীবনে যেমন স্বাস্থ্যবান ছিলেন, তেমনি তাঁর উম্মতকেও স্বাস্থ্য সচেতন হওয়ার আদেশ দিয়েছেন।

তিনি বলেন:“المؤمن القوي خير وأحب إلى الله من المؤمن الضعيف”

“শক্তিশালী মু’মিন আল্লাহর কাছে দুর্বল মু’মিন অপেক্ষা উত্তম ও প্রিয়।”— (সহীহ মুসলিম: ২৬৬৪)

এই হাদিস শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্য রক্ষার প্রতি ইসলামের গুরুত্বের প্রমাণ।


পরিচ্ছন্নতা—স্বাস্থ্য রক্ষার মূল ভিত্তি

ইসলামে পরিচ্ছন্নতা ঈমানের অঙ্গ। প্রতিদিন পাঁচ ওয়াক্ত ওজু করা, নিয়মিত গোসল, দাঁত পরিষ্কার, নখ কাটা, শরীরের ঘাম ও দুর্গন্ধ দূর করা এসবই ইসলামি স্বাস্থ্যবিধির অংশ।

রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন:“الطُّهُورُ شَطْرُ الْإِيمَانِ”

“পরিচ্ছন্নতা ঈমানের অর্ধাংশ।”— (সহীহ মুসলিম: ২২৩)


রোগ প্রতিরোধে খাদ্যাভ্যাস ও সুন্নাহ চিকিৎসা

নবী ﷺ-র সুন্নাহ অনুযায়ী তিনি খেজুর, মধু, কালোজিরা, শীতল পানি ইত্যাদি ব্যবহার করতেন যা আজকের বিজ্ঞানের গবেষণায়ও স্বাস্থ্যকর বলে প্রমাণিত হয়েছে।

তিনি বলেন:“عليكم بهذه الحبة السوداء، فإن فيها شفاء من كل داء إلا السام”

“তোমরা কালোজিরা ব্যবহার করো। এতে সব রোগের জন্য রয়েছে শিফা, মৃত্যু ব্যতীত।”— (সহীহ বুখারি: ৫৬৮৮)


ইসলাম কেবল আত্মিক শুদ্ধি নয়, বরং দেহ-মনের সুস্থতাকেও গুরুত্ব দেয়।

এক পরিপূর্ণ জীবন যাপনের জন্য স্বাস্থ্য সচেতনতা ইসলামের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ।

মুসলমান হিসেবে আমাদের দায়িত্ব, নিজের স্বাস্থ্য রক্ষা করা এবং সুন্নাহ অনুসরণ করে জীবন গঠন করা।

নিউজটি শেয়ার করুন

বিস্তারিত লিখুনঃ

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষণ করুন

ইসলামে স্বাস্থ্য সচেতনতার গুরুত্ব (তথ্যচিত্রধর্মী আলোচনা)

ইসলামে স্বাস্থ্য সচেতনতার গুরুত্ব (তথ্যচিত্রধর্মী আলোচনা)

আপডেট সময়ঃ ০২:২৭:২৪ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৫ মে ২০২৫

ইসলাম একটি পূর্ণাঙ্গ জীবন ব্যবস্থা, যেখানে মানব জীবনের প্রতিটি দিকের দিকনির্দেশনা রয়েছে—

আধ্যাত্মিকতা থেকে শুরু করে দৈনন্দিন জীবনযাপন, এমনকি স্বাস্থ্যের বিষয়েও।

কোরআন ও হাদিসে স্বাস্থ্য রক্ষার গুরুত্ব অসংখ্যবার উল্লেখ করা হয়েছে, যা প্রমাণ করে ইসলাম শুধুই একটি ধর্ম নয়, বরং মানবতার জন্য একটি জীবনব্যবস্থা।


স্বাস্থ্য সংরক্ষণ: ইসলামের মৌলিক দৃষ্টিভঙ্গি

আল্লাহ তাআলা কোরআনে ইরশাদ করেন:وَكُلُوا وَاشْرَبُوا وَلَا تُسْرِفُوا ۚ إِنَّهُ لَا يُحِبُّ الْمُسْرِفِينَ”

“তোমরা খাও এবং পান কর, কিন্তু অপচয় করো না। নিশ্চয় তিনি অপচয়কারীদের পছন্দ করেন না।— [সূরা আল-আ’রাফ: ৩১]

এই আয়াত ইসলামের খাদ্যাভ্যাস ও স্বাস্থ্যরক্ষার মূলনীতির উপর আলোকপাত করে।

স্বাস্থ্য সচেতনতায় পরিমিত আহার, পরিশ্রম ও বিশ্রামের সঠিক ভারসাম্য অপরিহার্য, যা কোরআনের এই বাণীতে প্রতিফলিত।


রাসূলুল্লাহ ﷺ-এর স্বাস্থ্যবিষয়ক সুন্নাহ

হজরত মুহাম্মদ (সা.) ছিলেন এক অনন্য স্বাস্থ্য সচেতন ব্যক্তিত্ব। তিনি ব্যক্তিগত জীবনে যেমন স্বাস্থ্যবান ছিলেন, তেমনি তাঁর উম্মতকেও স্বাস্থ্য সচেতন হওয়ার আদেশ দিয়েছেন।

তিনি বলেন:“المؤمن القوي خير وأحب إلى الله من المؤمن الضعيف”

“শক্তিশালী মু’মিন আল্লাহর কাছে দুর্বল মু’মিন অপেক্ষা উত্তম ও প্রিয়।”— (সহীহ মুসলিম: ২৬৬৪)

এই হাদিস শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্য রক্ষার প্রতি ইসলামের গুরুত্বের প্রমাণ।


পরিচ্ছন্নতা—স্বাস্থ্য রক্ষার মূল ভিত্তি

ইসলামে পরিচ্ছন্নতা ঈমানের অঙ্গ। প্রতিদিন পাঁচ ওয়াক্ত ওজু করা, নিয়মিত গোসল, দাঁত পরিষ্কার, নখ কাটা, শরীরের ঘাম ও দুর্গন্ধ দূর করা এসবই ইসলামি স্বাস্থ্যবিধির অংশ।

রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন:“الطُّهُورُ شَطْرُ الْإِيمَانِ”

“পরিচ্ছন্নতা ঈমানের অর্ধাংশ।”— (সহীহ মুসলিম: ২২৩)


রোগ প্রতিরোধে খাদ্যাভ্যাস ও সুন্নাহ চিকিৎসা

নবী ﷺ-র সুন্নাহ অনুযায়ী তিনি খেজুর, মধু, কালোজিরা, শীতল পানি ইত্যাদি ব্যবহার করতেন যা আজকের বিজ্ঞানের গবেষণায়ও স্বাস্থ্যকর বলে প্রমাণিত হয়েছে।

তিনি বলেন:“عليكم بهذه الحبة السوداء، فإن فيها شفاء من كل داء إلا السام”

“তোমরা কালোজিরা ব্যবহার করো। এতে সব রোগের জন্য রয়েছে শিফা, মৃত্যু ব্যতীত।”— (সহীহ বুখারি: ৫৬৮৮)


ইসলাম কেবল আত্মিক শুদ্ধি নয়, বরং দেহ-মনের সুস্থতাকেও গুরুত্ব দেয়।

এক পরিপূর্ণ জীবন যাপনের জন্য স্বাস্থ্য সচেতনতা ইসলামের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ।

মুসলমান হিসেবে আমাদের দায়িত্ব, নিজের স্বাস্থ্য রক্ষা করা এবং সুন্নাহ অনুসরণ করে জীবন গঠন করা।