প্রচন্ড গরমে বাচ্চাকে সুরক্ষিত রাখার ডাক্তারি পরামর্শ
প্রচন্ড গরমে বাচ্চাকে সুরক্ষিত রাখার ডাক্তারি পরামর্শ (স্বাস্থ্য প্রেসক্রিপশন)

- আপডেট সময়ঃ ০২:০৭:৪২ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৫ মে ২০২৫
- / ৪২ বার পড়া হয়েছে।
প্রচন্ড গরমের সময় শিশুদের শরীর অত্যন্ত সংবেদনশীল হয়ে পড়ে। কারণ তাদের দেহের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা (thermoregulation) এখনও পরিপূর্ণভাবে বিকশিত হয়নি।
তাই এই সময় বাচ্চাদের বিশেষভাবে যত্ন নেওয়া জরুরি। নিচে একটি স্বাস্থ্যকর প্রেসক্রিপশন তুলে ধরা হলো।
১. হাইড্রেশন—পানি ও তরল খাওয়ানো অপরিহার্য
গরমে শিশুরা খুব দ্রুত পানিশূন্যতায় ভুগতে পারে।
✅ ৬ মাসের নিচের শিশুদের শুধু বুকের দুধই যথেষ্ট।
✅ ৬ মাসের বেশি বয়সী শিশুদের স্যালাইন, ডাবের পানি বা ঠান্ডা (কিন্তু বরফ নয়) পানীয় দিতে পারেন।
✅ ফলের রস বা ঘরে তৈরি লেবুর শরবতও উপকারী।
২. হালকা ও আরামদায়ক পোশাক পরান
✅ বাচ্চাকে ঢিলেঢালা ও হালকা রঙের সুতি পোশাক পরান।
✅ গা ঘেঁষা বা সিনথেটিক কাপড় বর্জন করুন।
✅ শিশুর মাথায় হালকা ক্যাপ ও পা ঢাকার মতো পাতলা মোজা ব্যবহার করুন (বিশেষ করে সূর্যের নিচে গেলে)।
৩. বাড়ির ভেতর রাখুন শীতল পরিবেশ
✅ ঘরে যদি এসি না থাকে, তাহলে ফ্যান ও পর্দা দিয়ে ঠান্ডা রাখার চেষ্টা করুন।
✅ জানালার পর্দা টেনে রাখলে রোদ সরাসরি ঘরে প্রবেশ করতে পারে না।
✅ দিনের সবচেয়ে গরম সময় (দুপুর ১২টা–৩টা) বাইরে বের হওয়া বন্ধ করুন।
৪. গা ধোয়া ও গোসল—দৈনিক অভ্যাস করুন
✅ প্রতিদিন ১-২ বার গায়ে পানি ঢেলে দিতে পারেন।
✅ গরমে গোসল শিশুর ত্বক ঠান্ডা রাখে ও তাজা অনুভব করায়।
✅ গোসলের পানি যেন খুব ঠান্ডা না হয়—হালকা ঠান্ডা পানি ব্যবহার করুন।
৫. পর্যাপ্ত ঘুম ও বিশ্রাম নিশ্চিত করুন
গরমে অতিরিক্ত ঘাম ও অস্বস্তির কারণে শিশুর ঘুমের ব্যাঘাত ঘটে।
✅ ঘুমানোর ঘর ঠান্ডা ও আরামদায়ক রাখুন।
✅ শরীর ঘামে এমন বালিশ বা চাদর এড়িয়ে চলুন।
৬. খাবারে সতর্কতা—হালকা ও সহজপাচ্য খাদ্য দিন
✅ ভারী ও মসলাযুক্ত খাবার শিশুর জন্য এ সময় ক্ষতিকর হতে পারে।
✅ সহজপাচ্য ও পুষ্টিকর খাবার যেমন ভাত-ডাল, ফল, ও দই খাওয়ান।
✅ বাইরে থেকে আনা খাবার একদম এড়িয়ে চলুন।
৭. ত্বকের যত্ন—ঘামাচি ও র্যাশ থেকে সুরক্ষা
✅ শিশুর শরীরে নিয়মিত পাউডার ব্যবহার করুন (চিকিৎসকের পরামর্শে)।
✅ ঘামের কারণে র্যাশ হলে অ্যান্টিসেপটিক লোশন বা ঘরোয়া ঘামাচির পাউডার ব্যবহার করুন।
প্রচন্ড গরমে শিশুদের সুস্থ রাখার জন্য নিয়মিত পর্যবেক্ষণ, তরল খাবার, আরামদায়ক পরিবেশ ও সঠিক পোশাক নিশ্চিত করা অত্যন্ত জরুরি।
চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া কোনও ওষুধ ব্যবহার করা উচিত নয়। শিশুদের যত্ন নেওয়া মানেই একটি সুস্থ ও উজ্জ্বল ভবিষ্যতের দিকে এগিয়ে যাওয়া।