৫০টি বহুল আলোচিত প্রশ্নোত্তর
জুমুআর নামাজ : ফজিলত, গুরুত্ব, পদ্ধতি ও জুমুআর নামাজ না পড়ার পরিণতি
- আপডেট সময়ঃ ১০:৩৩:০৯ অপরাহ্ন, শনিবার, ৩১ মে ২০২৫
- / ৫২ বার পড়া হয়েছে।
জুমুআর দিনকে ইসলাম বিশেষভাবে সম্মানিত করেছে। এটি সপ্তাহের শ্রেষ্ঠ দিন, এই দিনেই হজরত আদম (আঃ) সৃষ্টি হয়েছেন, এই দিনেই তাঁকে জান্নাতে প্রবেশ করানো হয়েছে এবং এই দিনেই কিয়ামত সংঘটিত হবে।কুরআন ও হাদিসের আলোকে বিস্তারিত
রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেন:
“إِنَّ يَوْمَ الجُمُعَةِ سَيِّدُ الأَيَّامِ، وَأَعْظَمُهَا عِندَ اللَّهِ”
অর্থ: জুমুআর দিন সপ্তাহের সর্দার, এবং আল্লাহর কাছে সবচেয়ে বড় দিন।
— (সুনান ইবনে মাজাহ: 1084)
🔹 জুমুআর নামাজ না পড়লে কী পরিণতি হতে পারে?
রাসূলুল্লাহ ﷺ কঠোর ভাষায় সতর্ক করেছেন:
“لَيَنْتَهِيَنَّ أَقْوَامٌ عَنْ وَدْعِهِمُ الْجُمُعَاتِ أَوْ لَيَخْتِمَنَّ اللهُ عَلَى قُلُوبِهِمْ، ثُمَّ لَيَكُونُنَّ مِنَ الْغَافِلِينَ”
অর্থ: কিছু লোক যদি জুমুআর নামাজ পরিত্যাগ করা বন্ধ না করে, তবে আল্লাহ তাদের অন্তরে মোহর লাগিয়ে দেবেন এবং তারা গাফেলদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে যাবে।
— (সহীহ মুসলিম: 865)
“من ترك ثلاث جمع تهاونا بها طبع الله على قلبه”
অর্থ: যে ব্যক্তি অলসতাবশত তিনটি জুমুআর নামাজ ছেড়ে দেয়, তার অন্তরে আল্লাহ মোহর লাগিয়ে দেন।
— (আবু দাউদ: 1052)
🔹 জুমুআর নামাজের ফজিলত
-
গুনাহ মাফের সুযোগ
“যে ব্যক্তি সুন্দরভাবে অজু করে জুমআয় আসে… তার আগের জুমআ হতে এই জুমআ পর্যন্ত ও অতিরিক্ত তিন দিনের গুনাহ মাফ হয়ে যায়।”
— (সহীহ মুসলিম: 857) -
নামাযের দ্বিগুণ সওয়াব
“صلاة الجمعة إلى الجمعة كفارة لما بينهما”
— এক জুমআ থেকে পরের জুমআ পর্যন্ত সালাত গুনাহর কাফফারা।
— (সহীহ মুসলিম: 233) -
দরূদ পাঠের ফজিলত
এই দিনে রাসূল ﷺ-এর উপর বেশি করে দরূদ পাঠ করতে উৎসাহিত করা হয়েছে।
— (সুনান আবু দাউদ: 1531)
ফরজ হওয়ার শর্ত
-
পুরুষ হওয়া
-
বালেগ হওয়া
-
আকিল হওয়া (বুদ্ধিমান)
-
মুকিম হওয়া (স্থানীয়)
-
স্বাস্থ্যবান হওয়া
وَإِذَا نُودِيَ لِلصَّلَاةِ مِنْ يَوْمِ الْجُمُعَةِ فَاسْعَوْا إِلَىٰ ذِكْرِ اللَّهِ
অর্থ: “যখন জুমআর নামাজের জন্য আহ্বান করা হয়, তখন তোমরা আল্লাহর স্মরণের দিকে ধাবিত হও।”
— (সূরা আল-জুমুআ: 9)
🔹 জুমুআর নামাজের পদ্ধতি ও শর্তাবলী
🔸 খুতবা
-
দুইটি খুতবা দেওয়া হয়।
-
প্রথম খুতবায় আল্লাহর প্রশংসা, কুরআনের তিলাওয়াত এবং উপদেশ থাকে।
-
দ্বিতীয় খুতবায় দরূদ ও দোয়া থাকে।
🔸 নামাজের রাকাআত
-
দুই রাকাআত ফরজ।
-
সাধারণত: ৪ রাকাআত সুন্নাত আগে ও ৪ রাকাআত সুন্নাত পরে আদায় করা হয়।
জুমুআর নামাজের সুন্নাহ
৫. গোসল করা (غُسْل)
রাসুলুল্লাহ (ﷺ) বলেন:
“প্রত্যেক প্রাপ্তবয়স্ক মুসলিমের উপর জুমুআর দিনে গোসল করা আবশ্যক।”
— (বুখারী: ৮৭৭)
৬. সুগন্ধি ব্যবহার
৭. সুন্দর পোশাক পরা
৮. আগে গিয়ে প্রথম কাতারে বসা
৯. খুতবা মনোযোগ দিয়ে শোনা
১০. কথা না বলা, নাড়া-চাড়া না করা খুতবার সময়
🔹 ৫০টি বহুল আলোচিত প্রশ্নোত্তর (সংক্ষিপ্ত আকারে)
-
জুমুআর নামাজ কি ফরজ?
— হ্যাঁ, প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষদের জন্য ফরজ। -
মহিলাদের জন্য কি ফরজ?
— না, তাদের জন্য ফরজ নয় তবে পড়লে সওয়াব আছে। -
জুমুআর দিন গোসল করা কি জরুরি?
— সুন্নাতে মুয়াক্কাদা। -
জুমআ মিস করলে কি কাজা করতে হবে?
— হ্যাঁ, যোহরের কাজা করতে হবে। -
কত রাকাআত নামাজ পড়তে হয়?
— ২ রাকাআত ফরজ, বাকিটা সুন্নাত। -
খুতবা কি আরবি ভাষায় পড়া জরুরি?
— অধিকাংশ আলেমের মতে, হ্যাঁ, তবে ব্যাখ্যা স্থানীয় ভাষায় হতে পারে। -
মসজিদে আগে গেলে বেশি সওয়াব?
— হ্যাঁ, প্রথম আগত ব্যক্তির সওয়াব উট কোরবানির সমান। -
জুমুআর দিনে দোয়া কবুল হয় কখন?
— ইমাম খুতবা থেকে নামাজ শেষ হওয়া পর্যন্ত সময়ে। -
ঘুমিয়ে পড়লে জুমআ মিস হলে গুনাহ হবে?
— ইচ্ছাকৃত না হলে গুনাহ নয়, তবে অবহেলা করা ঠিক নয়। -
জুমআ না পড়ে কাজ করলে?
— হারাম কাজের মধ্যে পড়ে।
-
খুতবা চলাকালে কথা বলা যাবে?
না, খুতবার সময় কথা বলা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ।
রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেন:“যখন ইমাম খুতবা দিচ্ছে, তখন যদি কেউ তোমার পাশে বসা ব্যক্তিকে বলে, ‘চুপ করো’, তাহলেও সে অনর্থক কথা বলল।”
— (সহীহ মুসলিম: ৮৫৭) -
খুতবার সময় মোবাইল রিং বাজলে করণীয় কী?
যদি আপনার মোবাইল রিং বাজে, তবে দ্রুত চুপচাপ সাইলেন্ট করে দিন, কথা না বলে বা কারো মনোযোগ ভঙ্গ না করে। খুতবার সময় কোনো কথা, কমান্ড বা জোরে আওয়াজ করা নিষেধ।
-
কী কী আমল জুমুআর দিন সুন্নত?
-
গোসল করা
-
সুন্দর পোশাক পরা
-
আতর/সুগন্ধি ব্যবহার
-
তাড়াতাড়ি মসজিদে যাওয়া
-
সূরা কাহফ পড়া
-
অধিক দরুদ পাঠ
-
দোয়া করা, বিশেষ করে আসরের পর
— (বুখারী: ৮৭৭, মুসলিম: ৮৫৪)
-
-
-
সূরা কাহফ পড়ার ফজিলত কী?
“যে ব্যক্তি জুমুআর দিনে সূরা কাহফ পড়ে, তার ও পরবর্তী জুমুআ পর্যন্ত একটি নূর (আলো) সৃষ্টি হয়।”
— (মুস্তাদরাক হাকিম: ৩৩৯২)15.
জুমআ পড়ার আগে কি অযু করা জরুরি?
হ্যাঁ, অযু ছাড়া নামাজ হয় না।
জুমআ পড়ার জন্য পবিত্র থাকা ফরজ। আর অযু ছাড়া ফরজ নামাজ আদায় করা জায়েয নয়।
— (সূরা মায়েদা: ৬16.
জুমআর দিন কি রোজা রাখা যাবে?
শুধু জুমআর দিন একা রোজা রাখা নিষেধ। তবে বৃহস্পতিবার বা শনিবার মিলিয়ে রোজা রাখা যাবে।
“তোমরা শুধু শুক্রবার রোজা রেখো না, যদি না আগের বা পরের দিন মিলাও।”
— (সহীহ মুসলিম: ১১৪৪)17.
খুতবার সময় চোখ বন্ধ করে রাখা যাবে কি?
চোখ বন্ধ করার বিষয়ে নির্দিষ্ট নিষেধাজ্ঞা নেই, তবে মনোযোগ বাড়াতে কেউ করলে দোষ নেই, যদি তা অভ্যাসে পরিণত না হয়।
18.
খুতবা না শুনে মোবাইল দেখা যাবে?
না, এটি খুতবা শোনার আদবের পরিপন্থী।
খুতবার সময় ইমামের কথা মনোযোগ দিয়ে শোনা ফরজের মতো গুরুত্বপূর্ণ আদব। মোবাইল দেখা মনোযোগে ব্যাঘাত ঘটায়।19.
দুই খুতবার মাঝে দোয়া করলে কি কবুল হয়?
হ্যাঁ, অনেক উলামায়ে কিরাম বলেন, দুই খুতবার মাঝখানে ছোট সময়ের দোয়া কবুল হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। এটি “সাআতুল ইজাবাহ” হতে পারে।
20
জুমআর আগে দান করা কি উত্তম?
হ্যাঁ, জুমআর আগেই সদকা ও দান করা উত্তম।
আলী (রাযি.) বলেন:“যে ব্যক্তি জুমআর আগে দান করে, সে আল্লাহর নিকট উত্তম প্রতিদান পায়।”
(ইমাম গাযালী, ইহইয়াউ উলূমিদ্দিন)
-
🔹 জুমুআ সংক্রান্ত আরও গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নোত্তর
৩১. জুমুআর আগে কি সুন্নাহ নামাজ আছে?
হ্যাঁ, চার রাকাআত সুন্নাহ নামাজ আছে জুমুআর খুতবার আগে।
৩২. মোট কয় রাকাআত নামাজ পড়া হয় জুমুআয়?
২ রাকাআত ফরজ + ৪ রাকাআত সুন্নাহ (পূর্বে) + ৪ বা ২ রাকাআত সুন্নাহ (পরে)
৩৩. জুমুআয় যাওয়ার সময়ের আদব কী?
পরিচ্ছন্ন পোশাক, সুগন্ধি, শান্তভাবে হাঁটা এবং প্রথম কাতারে বসা।
৩৪. আজান চলাকালীন কথা বলা যাবে কি?
না, আজানের উত্তর দিয়ে চুপ থাকা উত্তম।
৩৫. বাসায় জুমুআ পড়া যাবে কি?
না, জুমুআ জামাত ও খুতবার শর্ত পূরণ না হলে বাসায় জুমুআ জায়েয নয়, তখন যোহরের নামাজ পড়তে হবে।
৩৬. জুমুআর আগে খাওয়া যাবে কি?
হ্যাঁ, খাওয়া যাবে; তবে দুর্গন্ধযুক্ত খাবার এড়িয়ে চলা উচিত।
৩৭. আগে যাওয়ার ফজিলত কী?
প্রথমে যাওয়াদের জন্য একটি উট কোরবানির সওয়াব, তারপর গরু, তারপর ভেড়া, ইত্যাদি।
— (বুখারী ও মুসলিম)
৩৮. মসজিদ ভর্তি হলে বাইরে নামাজ হবে কি?
হ্যাঁ, যদি ইমামের আওয়াজ শোনা যায় ও জামাতের শর্ত পূরণ হয়।
৩৯. খুতবার সময় দুই রাকাআত তাহিয়্যাতুল মসজিদ পড়া যাবে কি?
হ্যাঁ, সংক্ষেপে পড়া যাবে, তবে বিতর্কিত মাসআলা।
৪০. জুমুআর দিনে নখ কাটা বা চুল কাটা কি সুন্নত?
হ্যাঁ, জুমুআর দিনে পরিচ্ছন্নতা গ্রহণ করা সুন্নাহ।
৪১. শুক্রবার কোন সময় দোয়া কবুল হয়?
আসরের পর থেকে মাগরিব পর্যন্ত শেষ মুহূর্তে।
৪২. প্রবল বৃষ্টিতে কি জুমুআ মাফ হবে?
হ্যাঁ, অতিমাত্রায় বিপদ হলে যোহর নামাজ পড়া যাবে।
৪৩. অমুসলিমরা কি খুতবা শুনতে পারে?
হ্যাঁ, তারা অতিথি হিসেবে শুনতে পারে।
৪৪. খুতবার সময় কেউ কথা বললে কী হয়?
তার জুমুআর সওয়াব কমে যায়।
— (মুসলিম)
৪৫. সুগন্ধি ব্যবহার কি সুন্নাহ?
হ্যাঁ, বিশেষ করে পুরুষদের জন্য।
৪৬. এক শহরে একাধিক মসজিদে জুমুআ পড়া যাবে কি?
হ্যাঁ, প্রয়োজন হলে একাধিক স্থানে পড়া বৈধ।
৪৭. যদি ইমাম দ্বিতীয় খুতবা ভুলে যায়?
নামাজ হয়, কিন্তু সুন্নাহ লঙ্ঘন হয়।
৪৮. জুমুআর খুতবা শুধু বাংলায় দিলে হবে কি?
না, মূল অংশ আরবিতে হওয়া উচিত; ব্যাখ্যা বাংলায় দেওয়া যাবে।
৪৯. কাজ রেখে জুমুআয় যাওয়া কি ফরজ?
হ্যাঁ, কুরআনে বলা হয়েছে:
“হে ঈমানদারগণ! যখন জুমুআর জন্য আহ্বান করা হয়, তখন আল্লাহর স্মরণে ধাবিত হও…”
— (সূরা জুমুআ: ৯)
৫০. টানা তিনটি জুমুআ না পড়লে কী হয়?
হৃদয় মোহর করে দেওয়া হয়, এবং সে গাফেলদের মধ্যে লিখিত হয়।
— (আবু দাউদ: ১০৫২)
জুমুআ নামাজ ইসলামের একটি গুরুত্বপূর্ণ ফরজ বিধান। এর মাধ্যমে মুসলিম সমাজ আত্মশুদ্ধি, সামাজিক ঐক্য এবং আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন করে। যারা ইচ্ছাকৃতভাবে এটি পরিত্যাগ করে, তাদের জন্য কঠিন শাস্তির ঘোষণা রয়েছে কুরআন ও হাদীসে। সুতরাং, জুমুআ নামাজ যথাযথভাবে আদায় করা আমাদের ঈমানের অংশ।
FAQs (সাধারণ প্রশ্নোত্তর)
প্রশ্ন ১: কি কারণে জুমুআর নামাজ ফরজ হয়েছে?
উত্তর: মুসলিম সমাজকে একত্রিত করা, ইমান বৃদ্ধি, এবং ইসলামী ঐক্য প্রতিষ্ঠার জন্য।
প্রশ্ন ২: জুমুআর জন্য কি জামাত বাধ্যতামূলক?
উত্তর: হ্যাঁ, পুরুষদের জন্য জামাতে আদায় করা ফরজ।
প্রশ্ন ৩: নারীরা কি মসজিদে গিয়ে জুমুআ পড়তে পারবে?
উত্তর: পারবে, তবে বাসায় পড়া তাদের জন্য উত্তম।
প্রশ্ন ৪: জুমুআর খুতবার ভাষা কী হওয়া উচিত?
উত্তর: মূল অংশ আরবিতে, ব্যাখ্যা স্থানীয় ভাষায় দেওয়া যায়।
প্রশ্ন ৫: জুমুআর আগে কি নফল নামাজ পড়া যাবে?
উত্তর: হ্যাঁ, যত খুশি নফল পড়া যায় খুতবা শুরু হওয়ার আগ পর্যন্ত।
🔹 জুমুআর নামাজ মুসলমানদের জন্য শুধু একটি সাপ্তাহিক দায়িত্ব নয়, বরং এটি ইসলামের গুরুত্বপূর্ণ অনুশাসনের অন্যতম।
যারা এই নামাজে অবহেলা করে, তারা রাসূল ﷺ এর কঠিন সতর্কতার মুখোমুখি হয়। জুমআ আমাদের আত্মিক উন্নয়ন, সামাজিক একতা এবং আল্লাহর নৈকট্য লাভের শ্রেষ্ঠ সুযোগ।
আসুন, আমরা সবাই জুমুআর গুরুত্ব উপলব্ধি করি এবং তা যথাযথভাবে আদায় করি।
🔹 ৫টি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নোত্তর (FAQs)
-
জুমুআ মিস করলে ঘরে যোহর পড়া যাবে?
হ্যাঁ, যোহরের চার রাকাআত পড়া জরুরি। -
অজুহাতে জুমআ ফেলে দেওয়া কি বড় গুনাহ?
হ্যাঁ, এটি কবিরা গুনাহ। -
জুমআ নামাজে না গেলে কি কাফের হয়?
না, তবে গাফেলদের অন্তর্ভুক্ত হয়। -
জুমআর দিন কাজ করা যাবে না?
নামাজের সময় কাজ বন্ধ করা জরুরি, বাকী সময় কাজ করা জায়েজ। -
জুমআর সময় কোন সূরা পড়া সুন্নত?
সূরা জুমুআ ও সূরা মুন্নাফিকুন।











