প্রচন্ড রোদে শরীরের ওপর ব্যাপক প্রভাব পড়ে—ডিহাইড্রেশন, হিটস্ট্রোক, রোদের অ্যালার্জি বা ত্বকের সমস্যা দেখা দিতে পারে।

বিশেষ করে গ্রীষ্মের দুপুরে তাপমাত্রা মাত্রার বাইরে গেলে শরীর ক্লান্ত, দুর্বল ও অসুস্থ হয়ে পড়ে।

তাই রোদের দিনে সুস্থ থাকার জন্য নিচে একটি কার্যকর এবং বাস্তবভিত্তিক ডাক্তারি পরামর্শ বা স্বাস্থ্য প্রেসক্রিপশন দেওয়া হলো।

১. পর্যাপ্ত পানি পান করুন – হিটস্ট্রোক ঠেকাতে মুখ্য ভূমিকা

✅ দিনে অন্তত ১০-১২ গ্লাস পানি পান করুন।
✅ রাস্তায় বের হওয়ার আগে এক বোতল পানি সঙ্গে রাখুন।

✅ ডাবের পানি, ওরাল স্যালাইন, লেবুর শরবত ও ফলের রস খুব উপকারী।

২. রোদে বের হওয়া এড়িয়ে চলুন – বিশেষ করে দুপুর ১২টা থেকে ৩টা

✅ এই সময় তাপমাত্রা সর্বোচ্চ থাকে, যা হিটস্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়ায়।
✅ প্রয়োজনে বের হতে হলে ছাতা, হ্যাট বা সানগ্লাস ব্যবহার করুন।

✅ সঙ্গে অবশ্যই পানীয় এবং পাতলা তোয়ালে রাখুন।

৩. হালকা ও ঢিলেঢালা পোশাক পরুন

✅ সাদা বা হালকা রঙের সুতি কাপড় শরীর ঠান্ডা রাখতে সাহায্য করে।
✅ গা-ঘেঁষা কাপড় ত্বকে ঘর্ষণ সৃষ্টি করে যা র‍্যাশ বা অ্যালার্জির কারণ হতে পারে।

✅ মাথা ঢেকে রাখার চেষ্টা করুন (টুপি, ওড়না বা স্কার্ফ দিয়ে)।

৪. ঠান্ডা জায়গায় বিশ্রাম নিন ও ঘনঘন মুখ ধুয়ে নিন

✅ ঘরে ফিরে এসে তৎক্ষণাৎ ঠান্ডা পানি দিয়ে হাত-মুখ ধুয়ে নিন।
✅ দিনে একাধিকবার গোসল করলে শরীরের উত্তাপ কমে যায়।

✅ বিশ্রামের সময় শরীরের রক্তচাপ স্বাভাবিক হয়।

৫. ত্বকের যত্ন নিন – সানবার্ন এড়াতে সুরক্ষা জরুরি

✅ বাইরে যাওয়ার আগে সানস্ক্রিন ব্যবহার করুন (SPF 30 বা তার বেশি)।
✅ ত্বকে অতিরিক্ত ঘাম জমলে ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণের ঝুঁকি থাকে, তাই পরিষ্কার থাকুন।

✅ রোদের পর ঘামে ভেজা জামা দ্রুত বদলান।

৬. খাবারে সতর্ক থাকুন – হালকা ও সহজপাচ্য খাবার খান

✅ খুব ভারী, তেল-মশলাযুক্ত খাবার হজমে সমস্যা তৈরি করে।
✅ তাজা ফল, দই, ডাবের পানি বা সালাদ বেশি করে খাওয়ার চেষ্টা করুন।

✅ বাইরের খোলা খাবার ও বরফমিশ্রিত পানীয় এড়িয়ে চলুন।

প্রচন্ড রোদে সুস্থ থাকতে হলে আমাদের জীবনযাত্রায় কিছু পরিবর্তন আনা জরুরি। পর্যাপ্ত পানি পান, স্বাস্থ্যকর খাদ্য, হালকা পোশাক, বিশ্রাম এবং বাইরে বের হওয়ার সময় সাবধানতা অবলম্বন করলেই আমরা গ্রীষ্মের ভয়াবহ রোদে নিজেদের সুরক্ষিত রাখতে পারি।

মনে রাখবেন—প্রতিরোধই সর্বোত্তম চিকিৎসা।